ফাইল ছবি

চট্টগ্রামে সরকারি অনলাইন ভূমি ব্যবস্থাপনার সার্ভারে অনুপ্রবেশ করে জাল–জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া আইডি খুলে এক বৈধ মালিকের জমি আত্মসাতের চেষ্টা করার অভিযোগে ভূমি কর্মকর্তাসহ দুই জনের বিরুদ্ধে সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল জিনাত সুলতানার আদালতে মামলাটি গ্রহণ করা হয়। শুনানি শেষে আদালত মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জুয়েল দাস জানান, সরকারি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোয় বেআইনি প্রবেশ, হ্যাকিং, অননুমোদিত তথ্য সংগ্রহ, ক্ষতিসাধন ও সহায়তা— এ ধরনের অভিযোগে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫–এর বিভিন্ন ধারায় এ মামলা করা হয়েছে।

মামলার দুই বিবাদীরা হলেন, কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার দড়িগোয়ালী এলাকার মৃত নেকবার আলী সিকদারের ছেলে কবির হোসেন সিকদার এবং সুন্দলপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দিন। মামলায় আরও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, দাউদকান্দির বাসিন্দা জসিম উদ্দিন শিকদার গত ১৯ আগস্ট সুন্দলপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে তার ক্রয়কৃত ৪০ শতক জমির দুই বছরের খাজনা দিতে গেলে ভূমি কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন খাজনা গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেন।

তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট খতিয়ানে মালিক হিসেবে মানিক সিকদার নামে একজনের নাম নিবন্ধিত রয়েছে। পরে বাদী অনলাইনে ভূমি ব্যবস্থাপনা সিস্টেমে প্রবেশ করে প্রোফাইল প্রিন্ট নেন এবং দেখেন, কবির হোসেন সিকদার ছদ্মনাম ব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য, প্রতারণা ও জাল–জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া আইডি তৈরি করেছেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, কোনো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়াই নিয়ম বহির্ভূতভাবে ওই ভুয়া আইডি অনুমোদন দিয়েছেন সুন্দলপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন। এই প্রোফাইল তৈরির সময় বাদীর অনুমতি ছাড়া তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরও ব্যবহার করা হয়েছে, যা তিনি ২০০০ সাল থেকে ব্যবহার করছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, অনলাইনে খাজনা পরিশোধের জন্য আইডি তৈরি করতে মালিকানার খতিয়ান, জাতীয় পরিচয়পত্র, নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ওয়ারিশ সনদ জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। এসব তথ্য জমা না দিলে কোনো আইডি অনুমোদন দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে স্পষ্টতই নিয়ম ভাঙা হয়েছে এবং প্রতারণার মাধ্যমে বাদীর সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ আছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ভূমি কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দিন বলেন, এমন জালিয়াতির ঘটনা সত্য। তবে কীভাবে অনুমোদন দেওয়া হলো— এ প্রশ্নে কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি।

এমআর/এসএম