মৎস্য শ্রমিকদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি-পরিচয় নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন আলোচকরা। তারা বলেছেন, সারা দেশের আনুমানিক এক কোটি ২০ মানুষ মৎস্য খাতের সরবরাহ শৃঙ্খলে যুক্ত এবং ১৪ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা সরাসরি মৎস্য খাত নির্ভর হলেও শ্রমিকদের আইনগত সুরক্ষা ও জীবনরক্ষা ব্যবস্থা খুবই দুর্বল এবং তাদের জন্য নেই সামাজিক নিরাপত্তামূলক পর্যাপ্ত কর্মসূচি।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) ফার্মগেটে দ্য ডেইলি স্টার সেন্টারে আয়োজিত আইনি অধিকার ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ বিষয়ক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

তারা বলেন, শ্রম আইনে শুধু ফিশিং ট্রলার ও মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের শ্রমিকরা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তবে দেশের অন্য সব মৎস্য শ্রমিক আইনগত সুরক্ষার বাইরে রয়ে গেছেন। এছাড়াও চিংড়ি ও ট্রলার ইন্ডাস্ট্রির বাইরে কোনো মজুরি কাঠামো নেই। সিংহভাগ মৎস্য শ্রমিকই শ্রম আইন ও শ্রম পরিদর্শনের বাইরে। মৎস্য শ্রমিকদের কর্মে নিয়োগ, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা, চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণসহ কর্মপরিবেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রম আইনের বিধিবিধান অনুসরণ করা হয় না।

বক্তারা বলেন, মজুরি, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) সব শ্রমিকের জন্য নির্ধারিত হয়নি। শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি মারাত্মক, চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ নেই বললেই চলে। সাধারণভাবে শ্রমিকরা দাদন ও ঋণের জালে আবদ্ধ। কর্মক্ষেত্রে জীবনরক্ষা ব্যবস্থা বিশেষ করে ঝড়, জলোচ্ছ্বাস কিংবা জলদস্যুর আক্রমণ থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা দুর্বল। মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময় দেওয়া সরকারি সহায়তা পর্যাপ্ত নয়। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কারণে পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যায় না। ফলে শ্রমিকরা জীবনযাপনের উপযোগী অর্থ আয় করতে পারেন না। সাগরে সিগন্যাল সিস্টেম আধুনিক নয়, যা মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মৎস্য শ্রমিক অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক নইমুল আহসান জুয়েল বিলসের উপ-পরিচালক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, বিলস নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট (এএলএফ) সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, বিলস নির্বাহী পরিষদ সম্পাদক শাকিল আক্তার চৌধুরী, সলিডারিটি সেন্টার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর এ কে এম নাসিম, শ্রম অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক শাহ আব্দুল তারিক, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের আইন কর্মকর্তা মো. নাজমুল ইসলাম, মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মো. মোতালেব হোসেন প্রমুখ।

এএসএস/এসএসএইচ