দেড় কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ: রূপসা গ্রুপ এমডির বিরুদ্ধে মামলা
চট্টগ্রামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদ বিবরণী দাখিল না করার অভিযোগে রূপসা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন কমিশন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
বিজ্ঞাপন
আসামি জাকির হোসেন বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার ছাপড়াখালী ফুলহাতা গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম সফিজ উদ্দিন।
দুদক জানায়, জাকির হোসেন অসৎ উদ্দেশ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে ইস্যু করা সম্পদবিবরণী ফরম গ্রহণ করলেও তা পূরণ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কমিশনে দাখিল করেননি। এ ছাড়া তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে ১ কোটি ৫৮ হাজার ৭৫২ টাকার সম্পদ অর্জন করে তা ভোগ দখলে রাখার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
দুদক প্রধান কার্যালয়, ঢাকার স্মারক অনুযায়ী ২০২০ সালে অনুসন্ধানকালে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তার প্রতি সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। পরবর্তী সময়ে ২০২৫ সালের ১৯ জুন তাকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারি করা হয়।
দুদক সূত্রে জানা যায়, আসামির স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানায় তাকে না পাওয়ায় ২০২৫ সালের ৩১ জুলাই তার বাড়িতে সম্পদ বিবরণী ফরম ঝুলিয়ে জারি করা হয়। তবে নির্ধারিত ২১ কার্যদিবস অতিক্রান্ত হলেও তিনি সম্পদ বিবরণী দাখিল করেননি কিংবা সময় বৃদ্ধির জন্য কোনো আবেদনও করেননি।
অনুসন্ধানে আরও উঠে আসে, জাকির হোসেন ২০০৬ সাল থেকে রূপসা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রথম আয়কর দেন। তবে আয়কর নথিতে উল্লেখিত তার ব্যবসায়িক ঠিকানায় সরেজমিন পরিদর্শনে কোনো ব্যবসায়িক কার্যক্রমের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত জাকির হোসেনের নামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ১৯ লাখ ৯০ হাজার ২৩৬ টাকা। অপরদিকে তার বৈধ আয়ের উৎস পাওয়া গেছে মাত্র ১৯ লাখ ৩১ হাজার ৪৮৪ টাকা। এতে করে তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৫৮ হাজার ৭৫২ টাকা।
দুদক জানায়, এসব অভিযোগে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় মামলা রুজুর অনুমোদন দেয় কমিশনের প্রধান কার্যালয়, ঢাকা। অনুমোদনের পর মামলাটি রুজু করা হয়।
দুদক আরও জানায়, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তকালে রেকর্ডপত্রের আলোকে অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এমআর/এসএম