রাজধানীর মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় নাশকতার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৯ জুন) দুপুরে মগবাজারের ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে একথা বলেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।

তিনি জানান, আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে এসেছি। গ্যাস ডিটেক্টর মেশিন দিয়ে পরীক্ষা করে ঘটনাস্থলে ১২-১৩ শতাংশ মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এখন আমরা গ্যাসের উৎপত্তিস্থল খুঁজছি।

এত বড় বিস্ফোরণ কীভাবে হলো- জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস আবদ্ধ থাকার পর যখন বাতাসের সংস্পর্শে আসে তখন এক্সপ্লোসিভ মিক্সচার (বিস্ফোরক মিশ্রণ) তৈরি করে। এ মিক্সচার যদি ১৫ শতাংশের বেশি হয় তবেই বড় ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

তিনি বলেন, গ্যাস ডিটেক্টর মেশিন দিয়ে ঘটনাস্থলে ১২ থেকে ১৩ শতাংশ মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি আমরা পেয়েছি। প্রাথমিকভাবে অনুমান করছি, এখানে ভেতরেই কোনো গ্যাস চেম্বারে জমা হওয়া গ্যাস বাতাসের সংস্পর্শে এসে এক্সপ্লোসিভ মিক্সচার তৈরি করেছিল। এর কারণে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটেছে। এখন আমরা গ্যাসের রুট (সূত্র) খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। কী কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে তা তদন্ত শেষে পরে জানানো হবে।

একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ঘটনাস্থলে গ্যাসের উপস্থিতি থাকার কথা বলা হলেও তিতাসের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এখানে তাদের কোনো গ্যাস সংযোগ ছিল না। এছাড়া ভবনের সুয়ারেজ লাইনও অক্ষত রয়েছে। তবে গ্যাস কোথা থেকে এসেছে? উত্তরে সিটিটিসির এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা গ্যাসের উপস্থিতি ও রুট খুঁজে বের করার বিষয় নিয়েই কাজ করছি।

এর আগে সোমবার (২৮ জুন) বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করে পুলিশ সদরদফতর। কমিটির সভাপতি সিটিটিসির প্রধান আসাদুজ্জামান। 

পুলিশ সদরদফতর জানায়, কমিটি মূলত বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধান এবং এ ধরনের বিস্ফোরণ প্রতিরোধে সুপারিশগুলো তুলে ধরবে। কমিটিকে পরবর্তী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এছাড়াও কমিটিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের গঠিত তদন্ত কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে বলা হয়েছে।

রোববার (২৭ জুন) সন্ধ্যায় মগবাজারে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় মঙ্গলবার (২৯ জুন) সকাল পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে প্রশাসন। এছাড়া বেশ কয়েকজন ঢামেকসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

ভয়াবহ এই বিস্ফোরণের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পরবর্তী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধান করে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এআর/এসএম/জেএস