কামরাঙ্গীচরে গৃহবধূর মৃত্যু, হত্যা নাকি আত্মহত্যা?
প্রতীকী ছবি
রাজধানীর কামরাঙ্গীচরের বটতলা ঝাউচর এলাকায় আফিয়া আক্তার (১৮) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় তার স্বামী আব্দুল্লাহ আল ফয়সালকে পুলিশ ক্যাম্পে আটক রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুন) বিকেল সাড়ে ৩টায় দরজা লাগিয়ে গলায় ফাঁস দেন আফিয়া। তার স্বামী তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনেন। বিকেল ৫টায় চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিজ্ঞাপন
নিহতের স্বামী আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সম্পর্ক করে বিয়ে করেছি ৭-৮ মাস হলো। আমি রেডেক্স কুরিয়ার সার্ভিসে চাকরি করতাম। একমাস হলো চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। আজ দুপুরে আফিয়া আমাকে বলল, রুম থেকে বের হয়ে যাও। পরে সে রুমে দরজা দিয়ে একা থাকে। আমি বাসায় এসে দরজা ধাক্কাধাক্কি করলেও দরজা খোলে না। একপর্যায়ে দরজা ভেঙে দেখি সে ফ্যানের সাথে ফাঁস দিয়ে ঝুলছে।
তিনি বলেন, আমার সাথে আফিয়ার এমন কিছু হয়নি যে তাকে আত্মহত্যা করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
নিহত আফিয়ার বাবা জাকির হোসেন বলেন, আমার মেয়ে মারা যায়নি। আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে। গত এপ্রিল মাসের ১০ তারিখেও আমার মেয়েকে আব্দুল্লাহ অনেক মারপিট করে। আমার মেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। তার শাশুড়ি খালি বলত ফার্নিচার দেয় না, গহনা দেন না- এটা নিয়ে আমার মেয়েকে সব সময় মানসিক চাপে রাখত। আব্দুল্লাহর মা বাইরে গেলে বাসার দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে যেত। আমরা গরিব মানুষ। কোথায় পাব এত টাকা?
তিনি বলেন, আমাদের সাথে ২ মাস ধরে মেয়ের কোনো যোগাযোগ নেই। কী এমন হলো যে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করবে?
নিহতের শাশুড়ি রেহেনা আক্তার বলেন, আমার ছেলে সম্পর্ক করে বিয়ে করেছে। আমরা মেনে নিয়েছি। আমি দুপুরে হাঁড়িপাতিল ধুচ্ছিলাম। আমার ছেলে বাইরে থেকে এসে দরজা ধাক্কাধাক্কি করে। পরে দরজা ভেঙে দেখি আফিয়া ফ্যানের সাথে ঝুলছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা কামরাঙ্গীচর থানার ঝাউচর এলাকার লবন ফ্যাক্টরির পাশে মহিউদ্দিনের বাড়ির ২য় তলায় ভাড়া থাকি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, কামরাঙ্গীচর থেকে অচেতন অবস্থায় এক গৃহবধূকে ঢামেকের জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিল। পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে তার স্বামীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আমরা স্বামী আব্দুল্লাহকে ক্যাম্পে আটক রেখেছি। বিষয়টি কামরাঙ্গীচর থানায় জানানো হয়েছে।
এসএএ/এইচকে