বাবুল আক্তারের ২ সন্তানকে মাগুরা গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ
সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের দুই সন্তানকে মাগুরা গিয়ে শিশু আইন মেনে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৩০ জুন) চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ ফেরদৌস আরা শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন আবেদনকারীর আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আগে আদালতের একটি আদেশ ছিল বাবুল আক্তারের দুই সন্তানকে চট্টগ্রাম এনে জিজ্ঞাসাবাদের। আদেশটি বাতিল করার জন্য বাবুল আক্তারের ভাই হাবিবুর রহমান আদালতে আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনের শুনানি শেষে আদালত মিতু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমাকে মাগুরায় গিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাবুল আক্তার দুই সন্তানকে মাহমুদ মাহির (১২) ও মেয়ে তাবাসসুম (৭) জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মাগুরা সমাজসেবা অফিসে নিয়ে বাবুল আক্তারের দুই সন্তানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলা হয়েছে। যদি করোনা পরিস্থিতির জন্য সমাজসেবা অফিস বন্ধ থাকে তখন থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলেছেন আদালত।
বিজ্ঞাপন
আদালত সূত্রে আরও জানা গেছে, মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তদন্তের জন্য বাবুল আক্তারের দুই সন্তানকে তদন্তকারী কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদ করতে ১৩ জুন আদালতে আবেদন করেন। তখন আদালত ১৫ দিনের মধ্যে তাদের মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে হাজির করতে বাবুলের বাবা আব্দুল ওয়াদুদু মিয়া ও ভাই হাবিবুর রহমান লাবুকে নির্দেশ দেন। এরপর লাবু শিশু আইন অনুসারে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশনা চেয়ে চট্টগ্রামের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আবেদন করেন। পরে তা শুনানির জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এ পাঠানো হয়। এরপর শুনানি শেষে আজ আদালত এ আদেশ দিয়েছেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় ছেলে সামনেই দাঁড়ানো ছিল। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে তৎকালীন পুলিশ সুপার ও মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে মামলায় অভিযোগ করেন তিনি। তবে দিন যত গড়িয়েছে মামলার গতিপথও পাল্টেছে। একপর্যায়ে সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে আসে স্বামী বাবুল আক্তারের নাম। তদন্তে তার বিরুদ্ধেই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১১ মে ডেকে তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
১২ মে দুপুরে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তার শ্বশুর অর্থাৎ মিতুর বাবা। মামলায় আসামি করা হয় আরও সাতজনকে। তারা হলেন- কামরুল ইসলাম মুছা, কালু, ওয়াসিম, শাহজাহান, আনোয়ার, এহতেসামুল হক ভোলা ও সাকি।
এরপর পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও জবানবন্দি দেননি তিনি। বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন বাবুল আক্তার।
কেএম/এসএম