করোনা সংক্রমণ রোধে ০১ জুলাই থেকে দেশব্যাপী চলছে কঠোর লকডাউন। এবারের লকডাউনে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও সেনাবাহিনী সারাদেশে টহল দিচ্ছে। এই লকডাউনে অকারণে ঘর থেকে বের হলেই গুনতে হচ্ছে জরিমানা, যেতে হচ্ছে জেলে। সরকারের ঘোষিত লকডাউন সফল করতে শুরু থেকেই কঠোর অবস্থানে দায়িত্ব পালন করছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে শুরুর দুইদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কঠোর অবস্থানে থাকলেও লকডাউনের তৃতীয় দিনে রাজধানীর মিরপুরে গাছাড়া ভাব দেখা গেছে। 

শনিবার (৩ জুলাই) রাজধানীর বৃহত্তর মিরপুর এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, লকডাউনের প্রথম দিনে মিরপুরের দুয়ারীপাড়া থেকে কমার্স কলেজ রোড পর্যন্ত পুলিশের চৌকস তিনটি চেকপোস্ট থাকলেও তৃতীয় দিনে এসে পুলিশি চেকপোস্ট কমে হয়েছে মাত্র একটি। কমার্স কলেজ রোড থেকে মিরপুর-১ নম্বর পর্যন্ত লকডাউনের প্রথম দিন দুটি চেকপোস্ট থাকলেও আজ একটিও নেই। পুরো মিরপুর জুড়ে প্রধান প্রধান সড়কের চেকপোস্ট ঠিক থাকলেও অলিগলিতে টহল কমেছে। অন্যদিকে পুলিশের টহল ও চেকপোস্ট কমার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ জনগণও কারণে-অকারণে বাইরে বের হচ্ছে। 

রূপনগরের বাসিন্দা মোবারক হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, কতক্ষণ বাসায় থাকতে ভালোলাগে বলেন? এজন্য বাধ্য হয়েই বাসার বাইরে এসেছি একটু হাঁটাহাঁটি করতে। প্রথম দিনের তুলনায় আজ পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল নেই বললেই চলে। হাটবাজার সবই খোলা আছে, রিকশাও চলছে পুরোদমে। আর দু-একদিন পর লকডাউন আরও হালকা হয়ে যাবে। 

মিরপুর-১ নম্বর কাঁচা বাজারে আসা মিঠুন বলেন, কাঁচাবাজার করতে এসেছি। মাস্ক পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এসেছি। কিন্তু বাজারে এসে এতো লোকজন দেখে অবাক হয়েছি। সরকার যদি কঠোর লকডাউন দিয়ে থাকে তাহলে বাজারের অবস্থা এরকম কেন? রাস্তায় পুলিশ থাকলেও বাজারে মানুষদের স্বাস্থ্যবিধি মানাতে আমি প্রশাসনের কোনো লোকজন দেখিনি। আর বাজারে আসা মানুষগুলো বেশিরভাগই স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। 

এ প্রসঙ্গে মিরপুর জোনের ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি আ. স. ম. মাহতাব উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল (শুক্রবার) এবং আজ সরকারি বন্ধ রয়েছে। অফিস-আদালতসহ সবকিছুই বন্ধ। আজ তো মানুষ বের হওয়ারই কথা না। করণ ছাড়া কেন বের হবে মানুষ?

তিনি বলেন, আমরা কিন্তু এখনও মাঠে। সেনাবাহিনী, ম্যাজিস্ট্রেটসহ পুলিশ সবাই চেকপোস্ট বসিয়ে কাজ করছে। এটা গতকালও যা ছিল আজও তাই আছে। আমার মনে হয়, বাইরে আজ বাড়তি কোনো লোক নেই। যারা আছেন, তারা হচ্ছেন গার্মেন্টসকর্মী, রিকশাওয়ালা এবং বাজার করতে যাওয়া মানুষ।

তিনি আরও বলেন, আগামীকাল (রোববার) থেকে আবার যারা অকারণে বের হতে চেষ্টা করবে তাদের ধরা হবে। মাস্ক না পরায় আজ ১০০ জনকে জরিমানা করেছি। মানুষ খালি পুলিশকে ফাঁকি দেয়, পরে করোনায় আক্রান্ত হলে সরকারকে দোষ দেয়।

এসআর/এইচকে