লকডাউন দেখতে এসে পেলেন রোদে দাঁড়িয়ে থাকার শাস্তি
করোনা সংক্রমণ রোধে দেশজুড়ে চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। প্রয়োজন ছাড়া জনসাধারণের বাইরে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। তারপরও আদেশ অমান্য করে রাস্তায় বের হচ্ছে মানুষ। এমনই একজন স্বপন। লকডাউন দেখতে এসে তাকে পেতে হলো রোদে দাঁড়িয়ে থাকার শাস্তি।
শনিবার (৩ জুলাই) রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে সেনাবাহিনীর তল্লাশির সময় স্বপনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর মেজর হাসানের নেতৃত্বে একটি টিম ছিল।
বিজ্ঞাপন
সেনাবাহিনী বাইরে আসার কারণ জানতে চাইলে স্বপন বলেন, আমার কোনো কাজ ছিল না। শুনলাম বাইরে বাস-গাড়ি চলছে। তাই দেখতে বেরিয়েছিলাম।
স্বপন জানান, তার বাড়ি পুরান ঢাকার লালবাগে। নিজেকে তিনি জজকোর্টের শিক্ষানবিশ কর্মচারী হিসেবে পরিচয় দেন।
বিজ্ঞাপন
জিজ্ঞাসাবাদের পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে ঢাকা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা সুলতানা খান হিরা মনির ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নেন। তিনি স্বপনকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রোদে দাঁড়িয়ে থাকার নির্দেশনা দেন।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১২টা ৪৫ মিনিটেও স্বপন রোদে দাঁড়িয়ে আছেন। সঙ্গে একজন পুলিশ সদস্য দাঁড়িয়ে আছে তার দেখভালের জন্য।
সেনাবাহিনীর তল্লাশির স্থলে পুলিশও আছে। যারা মোটরযান আইন অমান্য করছেন তাদের পুলিশ মামলা দিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণ রোধে দেশে সর্বাত্মক লকডাউন চলছে। ১ জুলাই থেকে লকডাউন শুরুর পর সড়ক, রেল ও নৌ-পথে গণপরিবহনসহ সব ধরনের যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। বন্ধ আছে অভ্যন্তরীণ উড়োজাহাজ চলাচল। তবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু আছে। বিদেশগামী যাত্রীরা তাদের আন্তর্জাতিক ভ্রমণের টিকিট প্রদর্শন করে গাড়ি ব্যবহারপূর্বক যাতায়াত করতে পারছেন। এছাড়া বিদেশ থেকে আসা এবং বিদেশগামী আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাত্রীরা অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইটে চলাচল করতে পারবেন।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, বিধিনিষেধ চলাকালে আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন- কৃষিপণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি) খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যাবলী, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ফার্মেসি ও ফার্মাসিটিক্যালসসহ অন্যান্য জরুরি/অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র বহন করে যাতায়াত করতে পারবেন।
প্রজ্ঞাপন অনুসারে, পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক-কাভার্ডভ্যান, কার্গো ভেসেল এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে। বন্দরসমূহ (বিমান, সমুদ্র ও স্থল) এবং এ সংশ্লিষ্ট অফিস এই নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে। শিল্প কারখানাসমূহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে।
এআর/এইচকে