পাঁচ বছর ধরে হার্টের রোগে ভুগছেন মোহাম্মদ খায়রুদ্দিন। বেঁচে থাকতে দিনে তাকে ন্যূনতম ১৫০ টাকার ওষুধ খেতে হয়। কঠোর কোনো পরিশ্রম করতে পারেন না। এদিকে পাঁচ সদস্যের সংসারের জোয়াল রয়েছে ৫৫ বছর বয়সী এই ব্যক্তির কাঁধেই।

খায়রুদ্দিন ঢাকায় ২৫ বছর ধরে বসবাস করছেন। মধ্যবাড্ডায় ছোট্ট একটি দোকানই তার অবলম্বন। সেই দোকানের আয় দিয়ে কোনো মতে চলে জীবনসংসার। তার দোকানের প্রধান পণ্য কোমল পানীয়, টিস্যু, খাতা-কলম আর বিড়ি-সিগারেট।

করোনার প্রকোপ রোধে চলমান কঠোর লকডাউনে বন্ধ রাখতে হচ্ছে দোকানটি। পেটের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে যতক্ষণ দোকান খোলা রাখছেন, ততক্ষণ খুব বেশি বিক্রিও হচ্ছে না।

রোববার (০৪ জুলাই) বৃষ্টির সকালে দোকানটি খোলা রেখে সামনে দাঁড়িয়েছেন খায়রুদ্দিন। লকডাউনের দোকান খোলা রাখার কারণ জানতে চাইলে ঢাকা পোস্টকে বলেন, লকডাউন ভালো, ঠিক আছে। কিন্তু আমি একজন হার্টের রোগী। দিনে দেড়শ টাকার ওষুধ লাগে। আমি তো না পারি রিকশা চালাতে, না পারি ঠেলাগাড়ি চালাতে, কী করব? আমার সংসার কীভাবে চলবে? খাবারের কথা বাদ দেন ওষুধ দেবে কে?

মান-ইজ্জত নিয়ে বাঁচা দুষ্কর উল্লেখ করে তিনি বলেন, লকডাউনে দোকান বন্ধ রাখতে হচ্ছে। কিন্তু সরকারি কোনো সহায়তা আমার কাছে আসেনি। আমি তো কারও কাছে হাত পাততে যেতে পারি না।

তিনি বলেন, গত বছর টানা তিন মাস লকডাউন ছিল। সেই তিন মাসে সরকারের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা ও কিছু ত্রাণ পেয়েছিলাম। কিন্তু এ বছর কিছুই পাচ্ছি না। লকডাউন দিয়ে দোকান-পাট বন্ধ করে দিলে আমার মতো মানুষ কী করে জীবন চালাবে?

উল্লেখ্য, গত ২৮ জুন থেকে করোনাভাইরাসের প্রকোপ রোধ রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে লকডাউন চলছে। ১ জুলাই থেকে ঘোষণা করা হয়েছে সর্বাত্মক লকডাউন। এতে নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন।

এমআই/এইচকে