পরীমণির করা ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় মঙ্গলবার (২৯ জুন) আদালতে জামিন পান নাসির ইউ আহমেদ। তিনি বোট ক্লাবের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রোববার (৪ জুলাই) সাংবাদিকদের কাছে বিবৃতি পাঠিয়েছেন।

বিবৃতিতে নাসির দাবি করেন, পরীমণি মদ পান করার জন্য ক্লাবে তাণ্ডব চালান। তাণ্ডবে বাধা দিলে ৩-৪ দিন পর তিনি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তার (নাসির) নামে মিথ্যাচার করেন।

বিবৃতিতে যা বললেন নাসির

গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে নাসির বলেন, সম্প্রতি আমাকে নিয়ে প্রচারিত একটি মিথ্যা ঘটনা নিয়ে পরীমণি কর্তৃক যে অপপ্রচার করা হয়েছে তা আপনারা ইতোমধ্যেই অবগত হয়েছেন।

আপনাদের সদয় অবগতির জন্য সেদিন আসলে কী ঘটেছিল তা আমি বলতে চাই।

আমি ঢাকা বোট ক্লাবের কার্যকরী পরিষদের একজন সদস্য হিসেবে ক্লাবের ডিসিপ্লিন, মেনটেইনেন্স, কালচারাল অ্যাফেয়ার্স ও এন্টারটেইনমেন্টের দায়িত্বে নিয়োজিত।

সেই রাতের বর্ণনা

সেদিন রাত আনুমানিক ১২টায় বোট ক্লাবেরই একজন সদস্যের সঙ্গে তিন জন অতিথি ক্লাবের বারে প্রবেশ করেন।

আমি তখন অন্য টেবিলে অন্য সদস্যদের সঙ্গে বসে ছিলাম। আমি দূর থেকে লক্ষ্য করছিলাম তারা মদ্যপ অবস্থায়ই ক্লাবে প্রবেশ করেন। এ অবস্থায় তারা আমাদের পাশের একটি টেবিলে বসেন এবং ওয়েটারদের ড্রিংকসের বোতল দিতে বলেন। ওয়েটাররা এক বোতল ড্রিংকস টেবিলে সার্ভ করেন, তা অতি দ্রুত তারা শেষ করে ফেলেন এবং আরও এক বোতল ড্রিংকস টেবিলে আনান এবং সেই বোতলের অর্ধেকেরও বেশি শেষ করে ফেলেন। এ সময় নিয়ম বহির্ভূতভাবে পরীমণি (যার নাম আমি পরে জেনেছি) একটি দামি তিন লিটারের ‘ব্লুলেবেল’র বোতল বারের সেলফ থেকে নিজ হাতে তুলে নিয়ে টেবিলে আসেন এবং তার সঙ্গে নিতে চান।

এ সময় ওয়েটাররা তা নিতে বাধা দিলে পরীমণি ক্ষিপ্ত হন এবং ওয়েটারদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে টেবিলে রাখা প্লেট-গ্লাস অনবরত ছুড়ে ভাঙতে থাকেন।

যেহেতু আমি ক্লাবের ডিসিপ্লিনারি ইনচার্জ, সেহেতু বিষয়টির ব্যাপারে ওয়েটাররা আমার সাহায্য চায়। তখন আমি পরীমণিদের টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে বলি এই ড্রিংকসের বোতল বিক্রি যোগ্য নয়।

সেসময় পরীমণি আমাকে তুই-তোকারি করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন এবং টেবিলে রাখা প্লেট, গ্লাস ছুড়ে মারতে থাকেন। আমি তাকে বারবার অনুরোধ করি, যাতে তিনি এসব থেকে নিভৃত হন। কিন্তু পরীমণি তা কর্ণপাত না করে তিনি আমাকে লক্ষ্য করে গ্লাস ছুড়তে থাকেন এবং এক সময় একটি গ্লাস আমার ঘাড়ে লাগে। পরে আরও গ্লাস ছুড়তে চেষ্টা করলে আমি তাকে শান্ত হতে বলি। সেই মুহূর্তে তার সঙ্গে আসা জিমি (পরে নাম জেনেছি) আমার ওপর চড়াও হয়। এ অবস্থায় ক্লাবের বাইরে দায়িত্বরত সিকিউরিটি স্টাফদের ডাকি। কিছুক্ষণ পরেই ক্লাবের সিকিউরিটিরা উপস্থিত হন এবং বলি তাদের ক্লাব থেকে বের করে দাও। এ কথা বলে আমি ক্লাব ত্যাগ করি।

ঘটনার চার-পাঁচ দিন পর পরীমণি একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন এবং এর কিছুক্ষণ পর তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে আমাকে নিয়ে তার মিথ্যাচারে আমি হতভম্ব হয়ে পড়ি।

বিবৃতিতে নাসির বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মহামান্য আদালতের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। আমার বিশ্বাস, আমি ন্যায় বিচার পাব।

এআর/এসএসএইচ