করোনা টিকা নিতে আগ্রহীদের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে বয়স কমিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এর আগে টিকা গ্রহীতার বয়স সর্বনিম্ন ৪০ বছর থাকলেও এখন ৩৫ বছর করা হয়েছে। অর্থাৎ কারো বয়স ৩৫ হলে তিনি টিকার জন্য নাম নিবন্ধন করতে পারবেন। 

সোমবার (৫ জুলাই) বেলা ১১টায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, এখন থেকে ৩৫ বছর বয়স হলেই করোনার টিকার জন্য নিববন্ধন করা যাবে। দু-এক দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।

খুরশীদ আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) মাধ্যমে পাওয়া বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ লাখ ৪৫ হাজার শিক্ষার্থীর তালিকা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগকে দেওয়া হয়েছে। আজ আইসিটি বিভাগকে চিঠি পাঠানো হবে।

দেশে টিকা নিবন্ধনের শুরুর দিকে ৫৫ বছর বয়সীদের টিকার জন্য নিবন্ধন করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। পরে নিবন্ধন কম হওয়ায় আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় আনতে বয়স কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। সে সময় ৫৫ থেকে বয়স কমিয়ে ৪৪ বছর করা হয়। এরপর ২য় দফায় কমিয়ে ৪০ বছর করা হয়। এবার তৃতীয় দফায় টিকা গ্রহীতাদের বয়স কমিয়ে ৩৫ বছর করা হলো। 

স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, আপাতত তিনটি ক্যাটাগরিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিবন্ধন কার্যক্রম চলছে। দু'এক দিনের মধ্যেই সবার জন্য নিবন্ধন কার্যক্রম উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে এবং সুরক্ষা অ্যাপে আগের সবগুলো ক্যাটাগরি যুক্ত করে দেওয়া হবে।

এছাড়া এবার নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কৃষক-শ্রমিকদেরও যুক্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

টিকা প্রসঙ্গে খুরশীদ আলম বলেন, মডার্নার টিকা শিগগিরই আমরা প্রয়োগ শুরু করব। সেক্ষেত্রে অগ্রাধিকারপ্রাপ্তরা পাবেন মডার্নার টিকা। যারা আগে নিবন্ধন করেছেন, তারাই আগে টিকা পাবেন।

মডার্নার টিকা প্রয়োগ ১০ দিনের মধ্যে শুরু হতে পারে জানিয়ে অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, যিনি যে কেন্দ্রে নিবন্ধন করবেন তিনি সেই কেন্দ্রেই টিকা পাবেন। কেউ মডার্নার টিকা নিতে চাইলে তাকে সিটি করপোরেশন এলাকায় নিবন্ধন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকে পাওয়া মডার্নার টিকা সংরক্ষণ জটিলতার কারণে সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে টিকা ব্যবস্থাপনার এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকে পাওয়া ২৫ লাখ মডার্নার টিকা সংরক্ষণ জটিলতার কারণে সিটি করপোরেশনের বাইরে দেওয়া হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নার এ টিকা মাইনাস ১৫ থেকে মাইনাস ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। দেশের সব জেলায় এ সুবিধা না থাকার কারণে মডার্নার টিকা সিটি করপোরেশনের বাইরে দেওয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ যারা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এবং বয়সসীমা অনুযায়ী নিবন্ধন করবেন তারা এ টিকা পাবেন।

কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র থেকে মডার্নার ২৫ লাখ ডোজ  এবং বাণিজ্যিক চুক্তির আওতায় ২০ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা চলতি সপ্তাহে দেশে এসেছে। বর্তমানে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার ও সিনোফার্মের টিকার প্রয়োগ চলছে। নতুন এ টিকা চলমান কর্মসূচিতে যুক্ত হবে।

দেশে এ পর্যন্ত আটটি টিকার জরুরি প্রয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া টিকাগুলো হলো- ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড, রাশিয়ার স্পুটনিক-৫, চীনের সিনোফার্ম, যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার ও মডার্না, চীনের সিনোভ্যাক, বেলজিয়ামের জনসন অ্যান্ড জনসন এবং সুইডেনের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা।

টিআই/জেডএস/জেএস