‘গ্রামে অনেকে উপসর্গ নিয়ে মারা যাচ্ছে, পরীক্ষা করাচ্ছে না’
অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে গ্রামে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে। তাদের একটি বড় অংশ এখনও পরীক্ষা-নিরীক্ষার বাইরে থেকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম। তিনি বলেন, সচেতনতার অভাবেই গ্রামের মানুষ করোনা পরীক্ষা করাচ্ছে না।
বুধবার (৭ জুলাই) বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
স্বাস্থ্য মহপরিচালক বলেন, গ্রামের মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। পরিস্থিতি জটিল হওয়ার পর তারা চিকিৎসকের কাছে আসছে। তাদের অনেকেরই অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৫০ শতাংশের নিচে থাকছে। মস্তিস্কে অক্সিজেন স্যাচুরেশন বেশি সময় ধরে যদি কম থাকে তাহলে ‘ব্রেন ডেথ’ হয়ে যায়। এমন সময় যারা চিকিৎসা নিতে আসছে তাদের সামাল দেওয়া কঠিন হচ্ছে।
খুরশীদ আলম বলেন, আমাদের গ্রামের লোকেদের বিশ্বাস, তাদের করোনা হয় না। তারা সর্দি কাশিকে এক রকম উপেক্ষা করেন। কিন্তু তারা এমন সময় চিকিৎসা নিতে আসছে যখন তাদের সামাল দেওয়া কঠিন হচ্ছে। তাদের বাঁচানোও কঠিন হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০ রোগী মারা গেছে। এর মধ্যে ৮৩ শতাংশ মারা গেছে এ ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে। এছাড়া সারাদেশের একটি বড় অংশ মারা যাচ্ছে উপসর্গ নিয়ে। তাদের চিকিৎসার আওতায় আনা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মহাপরিচালক আরও বলেন, মৃত্যু প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করতে পারে গণমাধ্যম। গণমাধ্যম মানুষকে বেশি করে সচেতন করে তুলতে পারে।
করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রস্তুতি কী? -এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংক্রমণ প্রতিরোধে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে প্রস্তুতিরও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, এটা আমাদের মানতে হবে। কারণ রোগী যদি আমরা না কমাতে পারি, যতই প্রস্তুত থাকুন না কেন ১৬ কোটি মানুষের দেশে আমরা কত বিছানা দেবো? বিছানা দিয়েও সামাল দেওয়া যাবে না। রোগী উৎপাদন যাতে না হয় সে ব্যবস্থা নিতে হবে। আপনারা দেখছেন কঠোর লকডাউনের মধ্যে মানুষ কীভাবে বের হচ্ছে। লোকজন স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। এমন হতে থাকলে পরিস্থিতি খারাপ হবে। ঢাকার হাসপাতালগুলোর অবস্থা গ্রাম থেকে অনেক ভালো আছে। উপজেলা হাসপাতালগুলোতে আমরা শয্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক রাখার চেষ্টা করছি।
চীনের টিকা দেশে উৎপাদনের বিষয়ে আবুল বাশার খুরশীদ আলম বলেন, আমি শুনেছি আমাদের দেশীয় একটি কোম্পানি চীনের টিকা উৎপাদনের জন্য দেশটির সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আমার কাছে নেই।
টিআই/এসএম