ঈদের আগে আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে সকল পোশাকশ্রমিকদের পূর্ণ ঈদ বোনাস, বেতন ও বকেয়া পাওনা পরিশোধের আহ্বান জানিয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট। 

শুক্রবার (৯ জুলাই) সংবাদ মাধ্যমে সংগঠনটির সভাপতি আহসান হাবিব বুলবুল এবং সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদের পাঠানো এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিন রেকর্ড গড়ছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বাত্মক লকডাউন চলছে। পোশাকশ্রমিকদের এই লকডাউনের বাইরে রাখা হয়েছে। অথচ তাদের কর্মস্থলে যাওয়া-আসার জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয়নি। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মাইলের পর মাইল পথ পায়ে হেঁটে কর্মস্থলে পৌঁছাতে দেরি হলে তারা লাঞ্ছনা ও চাকরিচ্যুতির শিকার হচ্ছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য প্রায় দেড়গুণ হয়ে যাওয়ায় খাদ্য ব্যয় কমাতে বাধ্য হওয়া এই শ্রমিকদের দ্বিগুণ কাজের চাপ বহন করতে হচ্ছে। ফলে জীবিকার জন্য পোশাকশ্রমিকদের জীবনের ঝুঁকি বহুলাংশে বেড়েছে। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলেও মালিক বা সরকার শ্রমিকদের এই ত্যাগের কোনো স্বীকৃতি দিচ্ছে না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উৎপাদনের চাকা সচল রাখা শ্রমিকদের মজুরি, চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর ভূমিকা প্রশ্নবোধক। ৩/৪ মাসের বকেয়া মজুরির জন্য রাস্তায় নামা ক্ষুধার্ত শ্রমিককে লাঠিপেটা করা হচ্ছে। অথচ শ্রমিকের মজুরি আত্মসাৎ প্রচেষ্টাকারী মালিককে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না। সরকারের প্রশ্রয়ে পোশাকশিল্প মালিকদের আনেকেই চূড়ান্ত দায়িত্বহীন আচরণ করছেন।

আরও বলা হয়, লকডাউনের মধ্যে কারখানা খোলা এবং উৎপাদন পুরোদমে চালু আছে। প্রতি মাসের ৭ কর্মদিবসের মধ্যে পূর্ববর্তী মাসের মজুরি পরিশোধের বিধান থাকলেও লকডাউনের অজুহাতে অনেক কারখানায় এখনও শ্রমিকের চলতি মজুরি পরিশোধ করা হয়নি। আর ঈদের ছুটির মাত্র ১০ দিন বাকি থাকলেও প্রায় কোনো কারখানাই শ্রমিকদের ঈদ বোনাস পরিশোধ করেনি। লকডাউনের অজুহাতে শ্রমিকদের বেতন-উৎসব ভাতা পরিশোধে কোনো ধরনের গড়িমসি সহ্য করা হবে না। আমরা আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে পোশাকশ্রমিকদের কমপক্ষে ১ মাসের মজুরির সমান ঈদ বোনাস, জুন মাসের বেতন এবং ওভারটাইমের মজুরিসহ সকল বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে সিনহা গ্রুপ ও স্টাইল ক্রাফট পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সকল বকেয়া অবিলম্বে পরিশোধেরও আহ্বান জানাচ্ছি।

এমএইচএন/এইচকে