প্রতিদিন অন্তহীন ফাউন্ডেশনের বুথে ৪২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়/ ছবি : ঢাকা পোস্ট

চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থায় নগরীর সরকারি হাসপাতালগুলোয় ভিড় বাড়ছে নমুনা পরীক্ষা করাতে আসা মানুষের। অতিরিক্ত মানুষের চাপে করোনার নমুনা পরীক্ষায় হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।  

এমন পরিস্থিতিতে নগরীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে ঘুরে নমুনা সংগ্রহে নেমেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অন্তহীন ফাউন্ডেশন। সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা নগরের ছয়টি স্থান থেকে সপ্তাহে ছয় দিন নমুনা সংগ্রহ করেন। করোনার নমুনা সংগ্রহ করার জন্য রয়েছে তাদের বিশেষায়িত গাড়িও।

জানা গেছে, অন্তহীন ফাউন্ডেশন গত বছরের আগস্ট থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহ শুরু করে। কিন্তু মাঝে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে বন্ধ রাখা হয় কার্যক্রম। তবে পুনরায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে গত এপ্রিল থেকে আবারও নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম চালু করে সংগঠনটি।

অন্তহীন ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, ছয় দিন নির্দিষ্ট ছয়টি এলাকায় গিয়ে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। প্রতি শনিবার বাকলিয়ায়, রোববার হালিশহর, সোমবার আগ্রাবাদ, মঙ্গলবার বায়েজিদের শেরশাহ আরবান ডিসপেনসারি, বুধবার নিউ মার্কেটের মিউনিসিপাল স্কুলের উত্তর পাশে এবং বৃহস্পতিবার বহদ্দারহাট খাজা রোডে গাউসুল আজম আরবান ডিসপেনসারির সামনে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। প্রতিদিন ৪২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সিভিল সার্জন কার্যালয় এসব এলাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। সংগ্রহের পর নমুনা পাঠিয়ে দেওয়া হয় বিআইটিআইডিতে। পাশাপাশি করোনা পজিটিভ আসলে অন্তহীন ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ফোন করে আক্রান্ত ব্যক্তিকে জানিয়ে দেওয়া হয়।

অন্তহীন ফাউন্ডেশনে নমুনা দিয়েছেন এমন কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, সরকার নির্ধারিত হাসপাতালগুলোয় লাইনে দাঁড়িয়ে নমুনা দিতে হয়। কিন্তু অন্তহীন ফাউন্ডেশনের বুথে সহজেই নমুনা দেওয়া যায়।

নগরীর নিউমার্কেট এলাকায় অন্তহীন ফাউন্ডেশনের বুথে নমুনা দিয়েছেন আলমগীর হোসেন নামে এক ব্যক্তি। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বাসার কাছে হওয়ায় অন্তহীন ফাউন্ডেশনের বুথে গিয়ে নমুনা দিয়েছি। কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই।

বায়েজিদ শেরশাহ এলাকায় করোনার নমুনা দেওয়া সোনিয়া আক্তার বলেন, বাসার কাছে হওয়ায় সহজেই নমুনা দিতে পেরেছি। গাড়ি ভাড়া ও হাসপাতালে গিয়ে লাইন ধরে দাঁড়াতে হয়নি।

ফাউন্ডেশনের পরিচালক শরফুদ্দীন চৌধুরী কাজল ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরে ভ্রাম্যমাণ গাড়ির মাধ্যমে ছয়টি নির্ধারিত এলাকায় গিয়ে বুথের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। করোনা টেস্ট করাতে সাধারণ মানুষকে যে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়, তা কিছুটা লাঘব করার জন্য আমাদের এই প্রচেষ্টা । তবে সরকারি ফি হিসেবে জমা দিতে হবে ১০০ টাকা। হতদরিদ্র মানুষ যদি ফি দিতে ব্যর্থ হন তাহলে অন্তহীন ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বিনামূল্যেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘সংগৃহীত নমুনা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশন ডিজিসেসে (বিআইটিআইডি) পরীক্ষা করা হয়। গত বছর আগস্ট থেকে শুরু করে সোমবার (১২ জুলাই) পর্যন্ত তিন হাজার ৪২৮টি নমুনা সংগ্রহ করেছি আমরা।’

কেএম/এসকেডি