২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করতে এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষায় দ্রুতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের (এনটিসিসি) সমন্বয়কারী (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকার। তিনি বলেন, আইনটি সংশোধনের ব্যপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

শনিবার (১৭ জুলাই) ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসেন আলী খোন্দকার বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ উপহার দিতে হলে অতি দ্রুত আইন সংশোধন এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি চূড়ান্ত করতে হবে।

এদিকে, দেশের বর্তমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে আরও শক্তিশালী এবং যুগোপযোগী করে তুলতে আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সভায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন তামাকবিরোধী সংগঠনের কর্মীরা। তারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল—এফসিটিসির সঙ্গে অনেকাংশে সামঞ্জস্যপূর্ণ হলেও কিছু জায়গায় দুর্বলতা রয়েছে। যার ফলে আইনটির মূল উদ্দেশ্য বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই তামাক নিয়ন্ত্রণকে জোরদার করতে যতোদ্রুত সম্ভব বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করা জরুরি।

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান, অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে ১ লাখ ২৬ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। তামাকের ব্যবহার হ্রাস করার মাধ্যমে এই অকালমৃত্যু ও আর্থিক ক্ষতি প্রতিরোধ করা সম্ভব। এজন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে তা আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

বর্তমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে যেসব ক্ষেত্রে সংশোধন দরকার তার মধ্যে রয়েছে: সব ধরনের গণপরিবহন ও পাবলিক প্লেসে তামাক ব্যবহার শতভাগ নিষিদ্ধ করা, দোকানে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সিএসআর নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট আমদানি, উৎপাদন, বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের আকার নির্ধারণ করে দেওয়া এবং তামাকদ্রব্যের খুচরা বিক্রি নিষিদ্ধ করা।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রগতির জন্য জ্ঞান—প্রজ্ঞার তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সমন্বয়কারী হাসান শাহরিয়ার, সিটিএফকে বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

টিআই/এসএম