করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ১৩ জুলাই সরকারের জারি করা কঠোর বিধিনিষেধের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ নৌপথে সবধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে। এ সময়ে ফেরিতে কোনো যাত্রী উঠতে পারবে না, বন্ধ থাকবে যাত্রীবাহী লঞ্চও।

এছাড়া কঠোর বিধিনিষেধ চলাকালীন যাত্রীবাহী বাস ও ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমাণসাপেক্ষে শিথিলতা দেখানো হবে।   

বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম খানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘কোভিড-১৯ জনিত রোগ সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ১৩ জুলাইয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ নৌপথে সবধরনের যাত্রীবাহী নৌযান (লঞ্চ/স্পিডবোট/ট্রলার/অন্যান্য) চলাচল বন্ধ থাকবে।’ বিআইডব্লিউটিএ গত ১৩ জুলাই নৌযান পরিচালনা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানায়।

অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীবাহী নৌযানের মালিক, মাস্টার, ড্রাইভার, স্টাফ, যাত্রীসাধারণ ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ নির্দেশনা মেনে চলতে বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

বন্ধ থাকবে বাস-ট্রেন

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ ও স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করে বিধিনিষেধ চলাকালীন সড়ক, নৌ ও রেলপথে সব ধরনের যাত্রী পরিবহন বন্ধ থাকবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রান্সপোর্টেশন শাখা থেকে জানানো হয়, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ঈদের ছুটির পর সরকার আবারও কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে। অর্থাৎ ২৩ তারিখ (জুলাই) সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত রেলওয়ের সব যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধ থাকবে। তবে কন্টেইনার, খাদ্য, পণ্যবাহী ও বিশেষ পার্সেল ট্রেন চলাচল করবে।

পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ আদেশ কার্যকর থাকবে। এছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনাগুলো হচ্ছে- ১. সকল রেলওয়ে কন্ট্রোল অফিস সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে; ২. সকল কর্মকর্তা/কর্মচারী স্ব-স্ব হেড কোয়ার্টারে অবস্থান করবেন; ৩. সরকারের নির্দেশে যেকোনো সময় ট্রেন পরিচালনার প্রস্তুতি থাকতে হবে; ৪. নিরাপত্তার স্বার্থে রেলপথ এবং কোচগুলো রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলমান থাকবে ও রেলওয়ে স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথারীতি অব্যাহত রাখতে হবে; ৫. কন্টেইনার, খাদ্যসহ জরুরি পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল অব্যাহত থাকবে; ৬. প্রান্তিক কৃষকের উৎপাদিত কৃষিপণ্য, সবজি ও অন্যানা জরুরি পার্সেল মালামাল পরিবহনের জন্য বিশেষ পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করবে।

এদিকে, গত ১৪ জুলাই বিআরটিএ’র পরিচালক (প্রকৌশল) শীতাংশু শেখর বিশ্বাস স্বাক্ষরিত এক পত্রে বলা হয়,  ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল অবস্থায় গণপরিবহন চলাচল করবে এবং ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত গণপরিবহন চলাচল করবে না। তবে, আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবা, যেমন- কৃষিপণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন/বিক্রয়, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদান কার্যক্রম, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যাবলি, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাকসেবা, ব্যাংক, ভিসা সংক্রান্ত কার্যক্রম, সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা (পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সড়কের বাতি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম), সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, ফার্মেসি ও ফার্মাসিউটিক্যালসসহ অন্যান্য জরুরি/অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন-সাপেক্ষে যাতায়াত করতে পারবে।

জরুরি পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক/লরি/কাভার্ড ভ্যান এ নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে। বিদেশগামী যাত্রীগণ তাদের আন্তর্জাতিক ভ্রমলের টিকিট/প্রমাণক প্রদর্শন করে গাড়ি ব্যবহারপূর্বক যাতায়াত করতে পারবেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে।

কঠোর হবে এবারের বিধিনিষেধ : ফরহাদ হোসেন

পূর্বঘোষিত তারিখ অনুযায়ী আগামী ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়ে ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে বিধিনিষেধ। এর আগে ১৩ জুলাই দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বিধিনিষেধ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এবারের বিধিনিষেধ গতবারের চেয়ে কঠোর হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। 

২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট মানতে হবে যেসব বিধিনিষেধ

১. সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।

২. সড়ক, রেল ও নৌপথে গণপরিবহন (অভ্যন্তরীণ বিমানসহ) ও সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।

৩. শপিংমল/মার্কেটসহ সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে।

৪. সব পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।

৫. সবধরনের শিল্প-কলকারখানা বন্ধ থাকবে।

৬. জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক [বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান (ওয়ালিমা), জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি], রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

৭. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।

৮. ব্যাংকিং/বিমা/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।

৯. সরকারি কর্মচারীরা নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন এবং দাফতরিক কাজ ভার্চুয়ালি (ই-নথি, ই-মেইল, এসএমএস, হোয়াটসঅ্যাপসহ অন্যান্য মাধ্যম) সম্পন্ন করবেন।

১০. আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন-কৃষি পণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন/বিক্রয়, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদান কার্যক্রম, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যাবলী, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ভিসা সংক্রান্ত কার্যক্রম, সিটি করপোরেশন/পৌরসভা (পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সড়কের বাতি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কার্যক্রম), সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, ফার্মেসি ও ফার্সাসিউটিক্যালসসহ অন্যান্য জরুরি/অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে যাতায়াত করতে পারবে।

১১. বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় খোলা রাখার বিষয়ে অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।

১২. জরুরি পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক/লরি/কাভার্ড ভ্যান/নৌযান/পণ্যবাহী রেল/ফেরি এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে।

১৩. বন্দরগুলো (বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থল) এবং তৎসংশ্লিষ্ট অফিস এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে।

১৪. কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠন/বাজার কর্তৃপক্ষ/স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

১৫. অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত (ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

১৬. টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে।

১৭. খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রয় (অনলাইন/টেকওয়ে) করতে পারবে।

১৮. আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকবে এবং বিদেশগামী যাত্রীরা তাদের আন্তর্জাতিক ভ্রমণের টিকিট/প্রমাণ প্রদর্শন করে গাড়ি ব্যবহারপূর্বক যাতায়াত করতে পারবেন।

১৯. স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মসজিদে নামাজের বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দেবে।

২০. ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায় মাঠ পর্যায়ে কার্যকর টহল নিশ্চিত করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়েন করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয় সেনা কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।

২১. জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভা করে সেনাবাহিনী, বিজিবি/কোস্টগার্ড, পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার নিয়োগ ও টহলের অধিক্ষেত্র, পদ্ধতি ও সময় নির্ধারণ করবেন। সেসঙ্গে স্থানীয়ভাবে বিশেষ কোনো কার্যক্রমের প্রয়োজন হলে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।

২২. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখাক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

২৩. সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮-এর আওতায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীকে আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণের প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রদান করবেন।

বিদেশফেরত-গামীদের জন্য চলবে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট 

আগামী ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও আন্তর্জাতিক যাত্রীদের জন্য অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট ওঠা-নামার অনুমতি দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এক বিজ্ঞপ্তিতে বেবিচক জানায়, এখন থেকে এয়ারলাইন্সগুলো চাইলেই তাদের শিডিউল অনুযায়ী ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে। তবে শুধু বিদেশ থেকে আসা এবং বিদেশগামী আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাত্রীরা অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইটে চলাচল করতে পারবেন।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ও নভোএয়ার অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইটে শুধু বিদেশি যাত্রীদের বহন করতে পারবে।

বিদেশ থেকে এসেছেন কি না বা বিদেশে যাবেন কি না, সেটি নিশ্চিতে যাত্রীকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের টিকিট দেখাতে হবে। সেটি দেখেই অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য বোর্ডিং পাস নিতে হবে। সরকার-নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফ্লাইট পরিচালনা করতে হবে।

ঈদে ঢাকা ছেড়েছেন ৯৪ লাখ মানুষ

ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৫ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত ৯৪ লাখ ৫৩ হাজার মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। ঢাকার বাইরে যাওয়া সিমের হিসাব দিয়ে এমনটি জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, মোবাইল ব্যবহারকারীর চেয়ে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বেশি হবে। কারণ অধিকাংশই পরিবার নিয়ে ঢাকা ছাড়ছেন। একটি পরিবারের সবাই মোবাইল ব্যবহার করেন না, বিশেষ করে অল্প বয়সীরা। আবার অনেকেই আছেন একাধিক সিম ব্যবহার করেন। প্রসঙ্গত, গত ঈদুল ফিতরের সময়ে এক কোটির বেশি মোবাইল গ্রাহক ঢাকা ছেড়ে যান।

আজও ঢাকা ছেড়েছে মানুষ

ঈদের দ্বিতীয় দিনেও রাজধানী ছেড়েছে মানুষ। ভিড় কম আর নির্ধারিত সময়ে বাস-ট্রেন ছাড়ায় অনেকটা স্বস্তিতে বা‌ড়ি গিয়েছেন তারা। রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে, মহাখালী আন্তঃজেলা বাস স্টেশন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বি‌শেষ কা‌জে যারা ঢাকা ছি‌লেন, তারা বাড়ি যাচ্ছেন। আবার অনেকে ভিড়ের মধ্যে রাজধানী ছাড়তে চাননি, মূলত তারাই এখন যাচ্ছেন।

আটকে পড়ার ভ‌য়ে ঢাকায় ফিরছে মানুষ

বিধিনিষেধে বন্ধ থাক‌বে সবধর‌নের যানবাহন। তাই আটকে পড়ার ভ‌য়ে ঈদের আমেজ শেষ না হতেই ঢাকায় ফিরছে সাধারণ মানুষ ও কর্মজীবীরা। তারা বলছেন, কঠোর বিধিনিষেধে গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। আজ ঢাকা না ফিরলে ১৪ দিন গ্রামে আটকে থাকতে হবে। 

সরেজমিন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, বাস টার্মিনাল ও লঞ্চঘাট ঘুরে দেখা যায়, ট্রেন, বাস ও লঞ্চে তারা ভোগান্তি নিয়ে ফিরছেন। করোনার স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে, একপ্রকার গাদাগাদি করে ঢাকায় ফিরছেন হাজার হাজার মানুষ। 

করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি

বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৬৮৫ জনে।

এ সময় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন তিন হাজার ৬৯৭ জন। এতে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১ লাখ ৪০ হাজার ২০০ জনে।

এর আগে, বুধবার ১৭৩, মঙ্গলবার ২০০ ও সোমবার সর্বোচ্চ ২৩১ জনের মৃত্যু হয়। রোববার ২২৫ ও শনিবার ২০৪ জন মারা যান। শুক্রবার ১৮৭, বৃহস্পতিবার ২২৬, বুধবার ২১০, মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) ২০৩, সোমবার ২২০ ও রোববার ২৩০ জন মারা যান। গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়ায়। এদিন মৃত্যু হয় ২০১ জনের।

এইউএ/আরএইচ