‘বাংলাদেশে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক একটি ক্যাম্পেইন উদ্বোধন করা হয়েছে। 

ক্যাম্পেইনটি পরিবারগুলোকে বাল্যবিয়েতে নিরুৎসাহিত করতে এবং প্রতিটি কন্যাশিশুর সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের জন্য পারিবারিক সহযোগিতা নিশ্চিত করতে কাজ করবে। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ নিরসনে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (২০১৮-২০৩০) বাস্তবায়নের পদক্ষেপ আরও গতিশীল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) অনলাইনে ইউএসএআইডি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম এই ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বাল্যবিবাহ দূরীকরণে বদ্ধপরিকর। সরকার, উন্নয়ন সহযোগী, বেসরকারি সংস্থা, বেসরকারি খাত এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সবাইকে এটি বাস্তবায়নের জন্য একসাথে কাজ করতে হবে। করোনা অতিমারির এই সময়ে দেশে বৃদ্ধি পাওয়া বাল্যবিয়ের সংখ্যা হ্রাস করতে সময়োপযোগী এই ক্যাম্পেইন শুরু করার জন্য ইউএসএআইডির উজ্জীবন এসবিসিসি প্রকল্পটিকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।

ইউএসএআইডির জনসংখ্যা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও শিক্ষা অফিসের পরিচালক জারসেস সিধওয়া বলেন, বাল্যবিয়ে একটি মানবাধিকার লঙ্ঘন। বাল্যবিয়ের মতো একটি জটিল সমস্যার অবসান ঘটানোর জন্য আমাদের সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে এবং এজন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। বাল্যবিয়ের অভিশাপ থেকে বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করতে ইউএসএআইডি কাজ চালিয়ে যাবে এবং বাল্যবিয়ে নির্মূলের জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং অন্যান্য অংশীদারদের সাথে কাজ করবে, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিগত বছরগুলোতে বাল্যবিয়ে রোধে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ২০০৭-২০১৭ সালের মধ্যে ১৬ বছর বয়সের আগে মেয়েদের বিয়ের হার ৪৬ শতাংশ থেকে ৩২ শতাংশে নেমে এসেছে। ১৮ বছর বয়সের আগে বিয়ের হার (বিয়ের আইনি বয়স) ৬৬ শতাংশ থেকে কমে ৫৯ শতাংশে নেমে এসেছে। বর্তমানে করোনা অতিমারীতে বাংলাদেশে বাল্যবিয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর কারণ হিসেবে নিম্ন আয়ের পারিবারগুলোর আয় কমে যাওয়া এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকাসহ একাধিক বিষয় রয়েছে।
 
ইউএসএআইডির উজ্জীবন এই এসবিসিসি প্রকল্পটি জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামসের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। সচেতনতামূলক এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বাল্যবিয়ের কারণে অল্প বয়সে গর্ভধারণের ঝুঁকি এবং একই সাথে কন্যাশিশুদের উচ্চশিক্ষায় বিনিয়োগের সুফলগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। একই সাথে এই ক্যাম্পেইনটি বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি এবং বিদ্যমান ব্যবস্থাগুলোর মাধ্যমে সমাজের বাল্যবিয়ের ঘটনাগুলো প্রতিহত করা এবং ভুক্তভোগীদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেতে উদ্বুদ্ধ করবে। 

এমএইচএন/এনএফ