করোনায় আক্রান্ত মনিরুজ্জামানের বড় বোন। অবস্থা খারাপ হওয়ায় গত ২২ জুলাই জরুরি ভিত্তিতে তার জন্য আইসিইউর (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) দরকার হয়। খালি না থাকায় সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যায়নি আইসিইউ বেড। পরের দিন একজন রোগী চলে গেলে আইসিউর সেই বেডে বোনকে ভর্তি করেন মনিরুজ্জামান।

শুধু মনিরুজ্জামান নন, তার মতো অনেককেই আইসিউর জন্যে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। হয় কোনো রোগীর মৃত্যু, না হয় রোগীর সুস্থতার পরই মিলছে সোনার হরিণ আইসিইউ।

শুক্রবার (৩০ জুলাই) উত্তরার কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে মেলে এমন সব তথ্য।

হাসপাতালটির আইসিইউ ইউনিটে ভর্তি হওয়া রোগীর স্বজনদের ভাষ্য মতে, প্রয়োজনের পরও চাইলেই জরুরি ভিত্তিতে আইসিইউতে রোগী ভর্তি করা যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে আইসিইউ থেকে একজন রোগীকে রিলিজ করতে হবে।

ঢাকা পোস্টকে মনিরুজ্জামান বলেন, করোনা আমাদের অনেক শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে। শেষ সময়ে যদি আইসিইউ না পাওয়া যেত তাহলে যে কী হতো, তা ভাবতেই গা শিউরে উঠছে। এসব মুহূর্তের কথা বলে বোঝানো সম্ভব না। অনেক কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। তবে এখানকার আইসিইউ সেবা ভালো।

প্রায় একই অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন ময়মনসিংহ থেকে মাকে নিয়ে আসা আফরোজা সুলতানা ইমি। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, মায়ের অবস্থা খুবই খারাপের দিকে যাচ্ছিল। ময়মনসিংহে আইসিইউ না পাওয়ায় ঢাকায় আসতে হয়। এসেও সঙ্গে সঙ্গে আইসিইউতে ভর্তি করানো সম্ভব হয়নি। প্রায় ২০ ঘণ্টা অপেক্ষার পর বেড পাওয়া গেছে।

কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের সংশ্লিষ্টরা জানান, হাসপাতালটিতে মোট ২৬টি আইসিইউ বেড রয়েছে। প্রতিদিন একাধিক রোগীর আইসিইউ বেড দরকার হলেও সব সময় তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কোনো রোগী মারা যাওয়া বা সুস্থ হওয়ার পরই বেড খালি পাওয়া যাচ্ছে। চলতি মাস থেকে আইসিইউতে বেশি চাপ পড়ছে। এছাড়া অন্যান্য সেবা ঠিকঠাক চলছে। রয়েছে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থাও।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, এখানে মোট ২০০টি জেনারেল বেড রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রোগী ভর্তি হয়েছেন ১৫ জন। বর্তমানে মোট রোগী ভর্তি রয়েছেন ১৯২ জন। আইসিইউর ২৬টি বেডেই রোগী আছেন।

শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে করোনার নমুনা পরীক্ষা ও টিকা প্রদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র জরুরি রোগী ভর্তি ও ভর্তি থাকা রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।

একে/এমএইচএস/জেএস