পুলিশের সহযোগিতায় ৩ বছর পর মায়ের কাছে ফিরল জাহিদ
‘ছেলেকে কাছে পেয়েছি, এখন না খেয়েও শান্তি লাগে’। দীর্ঘ তিন বছর পর হারিয়ে যাওয়া ছেলে জাহিদকে (২৫) কাছে পেয়েই এমন মন্তব্য করেছেন মা ছানোয়ারা বেগম।
তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে আমার ছেলেকে ফিরে পেয়েছি। আমার ছেলেকে যার কল্যাণে ফিরে পেয়েছি তার জন্য নামাজ পরে দোয়া করি।’
বিজ্ঞাপন
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার চর খাগরিয়া এলাকার বাসিন্দা জাহিদ। তিন বছর ধরে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মানসিক ভারসাম্যহীনভাবে ঘুরে বেড়াতো। নিজের বাড়ির পাশে (ছাগলনাইয়া উপজেলার যশপুর গ্রাম) বেশ কয়েকদিন দেখে ওই যুবকের পরিচয় পাওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবিসহ স্ট্যাটাস দেন চট্টগ্রাম জেলা বিশেষ শাখায় (ডিএসবি) কর্মরত সালাউদ্দিন লিটন। এরপরই জাহিদের পরিবারের সদস্যরা লিটনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সবশেষ ৩০ জুলাই লিটনের মাধ্যমে ফেনীর ছাগলনাইয়া থেকে জিহাদকে বাড়ি নিয়ে যায় পরিবার।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে সালাউদ্দিন লিটন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত তিন বছর আমার গ্রামের বাড়ি ফেনীর ছাগলনাইয়া এলাকায় দোকানের সামনে জাহিদকে বসে থাকতে দেখতাম। এসময় তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মনে হতো। আমার বাবা ও বাচ্চারা তাকে খাবার দিত। এলাকার মানুষজনও তাকে খাবার দিত। তবে জাহিদ কারও সঙ্গে কথা বলতো না।
লিটন বলেন, এইবার বাড়ি গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি। তার কয়েকটা শব্দে শুনে নিশ্চিত হলাম তার বাড়ি চট্টগ্রামে। তখন আমি তাকে চট্টগ্রামের ভাষায় ওই জেলার সবকটি থানার নাম বলি। সাতকানিয়ার কথা বলতেই সে হ্যাঁ বলছে।
তিনি আরও বলেন, সাতকানিয়ায় আগে চাকরি করার সুবাধে নিজে ও বন্ধুদের মাধ্যমে ফেসবুকে তার ছবি প্রচার করি। পরে জাহিদের মামা আমার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। এরপর তাদের সঙ্গে ভিডিও কলে জাহিদকে কথা বলিয়ে দেই। জাহিদও তার মাকে চিনতে পারেন। পরে ৩০ জুলাই পরিপাটি করে তাকে পরিবারের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাড়িতে নেওয়ার পরও কথা বলেছি। জাহিদ ভালো আছে বলেছে তার পরিবার। ছুটি পেলে বাড়িতে গিয়ে তাকে দেখে আসবো।
ছেলেকে কাছে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা মা ছানোয়ারা বেগম। তিনি বলেন, ছেলেকে কত জায়গায় খুঁজেছি। সাতকানিয়া থেকে চট্টগ্রামের অলি গলিতে খোঁজেছি। কোথাও পায়নি। এমনকি পোস্টের ছাপিয়েছি ছেলের সন্ধানে। নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া চেয়েছি। যেন ছেলেকে ফিরে পাই। আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করেছেন।
তিনি বলেন, আমার ছেলে এখন অনেকটা ভালো আছে। মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ে। যার জন্য আমার ছেলেকে ফিরে পেয়েছি তার জন্য নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করি।
কেএম/এসএম