নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস ফ্যাক্টরিতে (সেজান জুসের কারখানা) লাগা আগুনে পুড়ে নিহত ৪৮ জনের মধ্যে ৪৫ জনের পরিচয় নিশ্চিত করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর মধ্যে ২৪ জনের মরদেহ বুধবার (৪ আগস্ট) দুপুর দেড়টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গ থেকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে সিআইডি ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন।

সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন জানান, আমরা পুড়ে যাওয়া ৪৮টি মরদেহের ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করেছিলাম। এদের মধ্যে ৪৫টি মরদেহের স্বজনদের সঙ্গে ডিএনএ ম্যাচ করে। বুধবার (৪ আগস্ট) ২৪টি মরদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করছি। এখনও তিনজনের ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করা হয়নি। এই তিনজনের মরদেহ শনাক্তে আরও সময় লাগবে। আগামী শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে বাকিদের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এসএম মাহফুজ রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২৪টি মরদেহ দাফন-কাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে স্বজনদের দেওয়া হয়েছে। আগামী শনিবার (৭ আগস্ট) বাকি ২১ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, আপনারা জানেন মরদেহগুলো পুড়ে যাওয়ায় পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। আমরা মরদেহ থেকে টিস্যু, দাঁত ও হাড় নমুনা হিসাবে সংগ্রহ করেছিলাম। ৪৮টি মরদেহের মধ্যে ৪৫ জনের পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছি। বাকি তিনজনের ডিএনএ এখনও ম্যাচ করেনি। এই তিনজনের মরদেহ শনাক্তে আরও কিছু সময় লাগবে।

সজীব গ্রুপের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার (ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট) কাজী আব্দুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ২৪টি মরদেহ নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া ও কফিনের খরচ বহন করেছি। স্বজনদের ঢাকায় আসার জন্য আমরা খরচ দিয়েছি।

আজ যে ২৪ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে তারা হলেন : মো. আয়াত হোসেন, মো. নাঈম ইসলাম, নুসরাত জাহান টুকটুকি, হিমা আক্তার, মোসা. সাগরিকা শায়লা, খাদেজা আক্তার, মোহাম্মদ আলী, তাকিয়া আক্তার, মোসা. শাহানা আক্তার, মোসা. মিতু আক্তার, জাহানারা, মোসা.ফারজানা, মোসা. ফাতেমা আক্তার, মোসা. নাজমা খাতুন, ইসরাত জাহান তুলি, মোসা. নাজমা বেগম, রাশেদ, মো. রাকিব হোসেন, ফিরোজা, মো. তারেক জিয়া, মো. রিপন মিয়া, মোসা. শাহানা আক্তার, মো. মুন্না ও রিয়া আক্তার।

উল্লেখ্য, ৮ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রূপগঞ্জের ভুলতার কর্ণগোপ এলাকায় সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস ফ্যাক্টরির (সেজান জুসের কারখানা) নিচতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন পুরো কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার দিন প্রাণ বাঁচাতে ভবনটি থেকে লাফিয়ে পড়ে স্বপ্না রানী (৪৫) ও মিনা আক্তার (৩৩) নামে দুই শ্রমিক মারা যান। ৯ জুলাই দুপুরে কারখানার ভেতর থেকে আরও ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এসএএ/এসকেডি