প্রকল্প বাস্তবায়নের আগেই যন্ত্রাদি কেনার চেষ্টা, টিআইবির ক্ষোভ

বঙ্গমাতা ন্যাশনাল সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার রিসার্চ সেন্টারে (বিএনসিএমআরসি) অবকাঠামোগত কাজ শুরুর আগেই অস্থায়ী ল্যাবের নামে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যন্ত্রপাতি কেনার উদ্যোগে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। রোববার (৮ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এ ক্ষোভ জানানো হয়।

টিআইবি বলছে, সরকারি ক্রয়বিধির প্রচলিত নিয়ম না মেনে এ প্রকল্পে যেভাবে একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠানকে বাড়তি দরে কাজ দেওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি প্রভাব খাটানোর যে খারাপ নজির তৈরি করা হয়েছে তা সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির একটি নগ্ন উদাহরণ। এক্ষেত্রে দরপত্র প্রক্রিয়া আটকে দেওয়ার মধ্যে দায়িত্ব শেষ না করে এমন চেষ্টার কুশীলবদের জবাবদিহির আওতায় এনে প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, একটি আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা গবেষণাগার প্রতিষ্ঠার জন্য তিন বছর আগে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদকে (বিএমআরসি) পাঁচ বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প দেওয়া হলেও এখনো নানা অজুহাতে তার ভৌত অবকাঠামোর কাজ শুরু হয়নি। বরং হঠাৎ একটি অস্থায়ী ল্যাব প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ কী বিবেচনায় নেওয়া হলো?

তিনি বলেন, যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা ছাড়াই অর্ধশত কোটিও বেশি টাকার কেনাকাটার আয়োজন করা হয়েছে। অস্বচ্ছ দরপত্র প্রক্রিয়ায় পছন্দের বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে অধিক দরে কাজ পাইয়ে দেওয়ার এ চেষ্টা ল্যাব স্থাপনের নামে সরকারি অর্থ লোপাটের দুরভিসন্ধি। এর চেয়েও হতাশার বিষয় হচ্ছে সরকারি ক্রয়বিধির ব্যত্যয় ঘটানো এ অবৈধ প্রক্রিয়াকে বিএমআরসি চেয়ারম্যান যেভাবে সমর্থন দিয়েছেন।

ড. জামান বলেন, প্রকল্প পাসের পর প্রশ্ন ওঠায় দায়সারাভাবে একটি সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন দিয়ে একদিকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হলো। অন্যদিকে ভৌত অবকাঠামোগত কাজ শুরু না করেই পণ্য কেনার মাধ্যমে শুরু হতে যাওয়া এ প্রকল্প বাস্তবায়নে চূড়ান্ত বিচারে কী পরিমাণ অনিয়ম-দুর্নীতি হতে পারে, সেই চিন্তাটাও আতঙ্কজনক। তাই প্রকল্পটির সুষ্ঠু ও দুর্নীতিমুক্ত বাস্তবায়নে এ সংক্রান্ত সকল কমিটি ঢেলে সাজাতে হবে এবং কঠোর তদারকির মাধ্যমে জবাবদিহিমূলক প্রক্রিয়া জোরদার করতে হবে।  

বিভিন্ন সরকারি খাতের ওপর টিআইবি পরিচালিত গবেষণায় ক্রয়-সংক্রান্ত বিষয়ে দুর্নীতির ফলে ক্রয় বাজেটের ৮ দশমিক ৫ থেকে ২৭ শতাংশ ক্ষতি হওয়ার তথ্য উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সরকারি কেনাকাটা এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন সময় অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য এলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা অস্বীকার করা হয় কিংবা এড়িয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু এ প্রকল্পে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তবে এ উদ্যোগ যেন শুধু এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ না থাকে। 

আরএম/আরএইচ