করোনা সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে সারা দেশে আরোপ করা কঠোর বিধিনিষেধ গত ১১ আগস্ট থেকে শিথিল করা হয়েছে। বিধিনিষেধের কারণে অনেকদিন ঘরবন্দি থাকার পর এখন নানা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন নগরবাসী; বের হচ্ছেন প্রয়োজন ছাড়াও। 

সাপ্তাহিক ২ দিন ছুটি শেষে রোববার শোক দিবসের বাড়তি ছুটি পান নগরবাসী। রাজধানীর বিভিন্ন পার্ক ও উন্মুক্ত স্থানে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে বের হন অনেকে। এ সময় অধিকাংশ মানুষকেই মাস্ক ছাড়া চলাফেরা করতে দেখা গেছে। সামাজিক দূরত্ব ভুলে গেছেন সবাই। ছুটির দিনে যেন করোনাকেই তারা ছুটি দিয়েছেন! 

রোববার (১৫ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডি লেক, রবীন্দ্র সরোবর, সংসদ ভবন এলাকা, চন্দ্রিমা উদ্যান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক ও হাতিরঝিল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শতশত মানুষ পরিবার প্রিয়জন নিয়ে এসব এলাকায় এসেছেন। তাদের কেউ মেতেছেন খোশগল্পে, কেউ বাদাম খাচ্ছেন। কেউ কেউ ছবি তুলছেন। 

অনেককেই দেখা গেছে শিশুদের নিয়ে ঘরের বাইরে আসতে। শিশুরা ছোটাছুটি করে খেলছে। আবার কোথাও কোথাও সিনিয়র সিটিজেনদের নীরবে বসে থাকতে দেখা গেছে। 

ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে ঘুরকে এসেছেন প্রচুর মানুষ। সেখানে একরকম ভিড়ই দেখা গেছে। লেকের পাড়ে এমন কোনো স্থান নেই যেখানে মানুষের জটলা নেই। দেখে মনেই হবে না এখন সময়টা করোনার। সবাই যেন দম ফেলতে ছুটে এসেছেন এখানে। লেকের পাশের ফুডকোর্টগুলোতেও ব্যস্ততা দেখা গেছে।

চন্দ্রিমা উদ্যানে কথা হয় মোহাম্মদপুর থেকে আসা হুমায়রা লোপার সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমি নিয়মিতই সকালে এখানে হাঁটতে আসি। কিন্তু পরিবারের ছোট সদস্যদের আনিনি। তাছাড়া দীর্ঘদিন ওরা ঘরবন্দি। কাল থেকে আবার অফিস শুরু, ভাবলাম মুক্ত বাতাসে ওদের একটু ঘুরিয়ে নিয়ে আসি। তাই পুরো পরিবার নিয়ে এখানে এসেছি। তবে এখানে অনেকে মাস্ক ব্যবহার করছে না, বিষয়টা উদ্বেগের।’

সংসদ ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে ফরিদ হোসেন নামে একজন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা অনেকদিন হলো ঘরে ছিল। তাই একটু বাইরে এসেছি ঘুরতে। কিন্তু কেউ তো স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। দেখে ভয় পাচ্ছি।’ 

তিনি বলেন, মানুষ যদি এত অসাবধানতার সঙ্গে চলে আর সরকার যদি এতে তৃপ্ত হয় তাহলে বাংলাদেশে মহামারি কখনোই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। মানুষকে বাইরে বের হতে হলে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

সবাই বিনোদন চায়। তবে বিনোদন যেন ভোগান্তির কারণ না হয় তা নিজেদেরই নিশ্চিত করতে হবে বলে মনে করেন সচেতন নাগরিকরা। তারা বলেন, সময় কাটাতে বাইরে বের হলেও মুখে মাস্ক রাখা এবং সামাজিক দূরত্ব মানার বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। 

এমএইচএন/এইচকে/জেএস