পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সামী হুদাসহ চার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) দুর্নীতির সংশ্লিষ্টতায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্ক তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গত ১০ জানুয়ারি তাদের তলব করে চিঠি পাঠিয়েছিল অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।

যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তারা হলেন- পিপলস লিজিংয়ের সিইও ও এমডি সামী হুদা, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী আহমেদ জামাল, সিএফও মানিক লাল সম্মাদার ও হেড অব ক্রেডিট মো: মাহমুদা কায়সার।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এমডি সামী হুদা গণমাধ্যমকে বলেন, আমাকে দুটি ঋণের বিষয় জানতে ডাকা হয়েছিল। ওই ঋণ ২০১৯ সালেই অ্যাডজাস্ট হয়ে গেছে। বাকি বিষয় দুদক থেকে জেনে নিবেন।   

অভিযোগের বিষয়ে ‍দুদক সূত্রে জানা যায়, পি কে হালদার রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের এমডি থাকা অবস্থায় তার স্বজনদের দিয়ে আরো বেশ কয়েকটি লিজিং কোম্পানির ইন্ডিপেন্ডেন্ট পরিচালক বানান ও একক কর্তৃত্বে অদৃশ্য শক্তির মাধ্যমে পিপলস লিজিংসহ বেশ কয়েকটি লিজিং কোম্পানির টাকা বিভিন্ন কৌশলে বের করে আত্মসাত করেন। পিপলস লিজিংয়ের তিন হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন কৌশলে আত্মসাৎ করে কোম্পানিকে পথে বসিয়েছেন। এছাড়া দেয়া শিপিং লিমিটেডকে ৩০ কোটি টাকা ও এমটিবি মেরিন লিমিটেডকে ৩০ কোটি টাকা জামানত না দিয়েই ঋণ দিয়েছেন। এ সংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের তলব করা হয়েছিল।

এর আগে পিপলস লিজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান মতিউর রহমান ও সাবেক পরিচালক আরেফিন সামসুল আলামিনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৭ জনকে তলব করা হলেও তারা হাজির হননি।

ক্যাসিনো অভিযানের ধারাবাহিকতায়  পি কে হালদারের বিরুদ্ধে এরই মধ‌্যে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ মামলা করে দুদক। তবে মামলার আগে থেকেই তিনি লাপাত্তা। ওই এজাহারে পি কে হালদার ও তার সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনক এক হাজার ৬৬৫ কোটি টাকার লেনদেনের বিষয়ে তথ্য ছিল। 

দুদক বলছে, কয়েকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি, কর ফাঁকির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থের মালিক হয়েছেন পি কে হালদার।

ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের পরপরই তার নাম উঠে আসে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২০২০ সালের ১৪ নভেম্বর হাজির হতে নোটিশ দিয়েছিল সংস্থাটি। তার আগে ৩ অক্টোবর তার বিদেশযাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ঠিকই দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। পরে দেশে আসার কথা বলেও আর আসেননি। এরই মধ্যে ৮ জানুয়ারি দুদকের অনুরোধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়ে রেড এলার্ট জারি করেছে ইন্টারপোল। গত ৫ জানুয়ারি পি কে হালদারের প্রতারণায় সহায়তাকারী ২৪ জনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।

আরএম/ওএফ