মেয়েদের পালিয়ে বিয়ে নিয়ে সংসদীয় কমিটির মন্তব্যে তীব্র ক্ষোভ ও গভীর বিস্ময় প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। সংগঠনটি বলছে, সংসদীয় কমিটির এমন মন্তব্য ভিত্তিহীন। এতে বাল্যবিয়ের প্রকৃত কারণসমূহকে আড়াল করা হয়েছে, যা দুর্ভাগ্যজনক। 

বৃহস্পতিবার মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এবং সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানুর সই করা বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বলছে, আমরা তীব্র বিস্ময় ও পরিতাপের সঙ্গে সংবাদমাধ্যমে লক্ষ্য করলাম যে, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভায় মন্তব্য করা হয় যে, অল্পবয়সী মেয়েরা বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করার কারণে বাল্যবিয়ের হার বাড়ছে। এ সংবাদ আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

মহিলা পরিষদ মনে করে যে, দেশে বাল্যবিয়ের হার বৃদ্ধি পেয়েছে, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এটি স্বীকার করলেও তারা যে কারণ উল্লেখ করেছে, তাতে প্রকৃত কারণসমূহকে আড়াল করা হয়েছে, যা দুর্ভাগ্যজনক। এ পর্যবেক্ষণ যথাযথ নয় এবং প্রকৃত সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারবে না।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, বাল্যবিয়ের প্রধান কারণ দারিদ্র্য, নিরাপত্তাহীনতা ও পিতৃত্রান্ত্রিক সংস্কৃতি, যার ফলে কন্যাকে বোঝা বিবেচনা করে অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। 

করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা ঘরে আছে। এতে বেড়েছে পারিবারিক সহিংসতা। এ সময়ে মানুষের আয় কমেছে। এ কারণে কন্যাশিশুকে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া অনেক বিয়ে নিবন্ধন না করেই হচ্ছে। বিয়ের জন্য বয়স বাড়িয়ে নতুন করে কন্যা শিশুর জন্মসনদ করা হচ্ছে। 

বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে গৃহীত কর্মসূচি বাস্তবায়ন গুরুত্ব না পাওয়া, এ বিষয়ে যথাযথ মনিটরিংয়ের অভাব এবং সর্বোপরি বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনের বিশেষ শর্ত বাল্যবিয়ে বাড়ার অন্যতম কারণ বলে মহিলা পরিষদ মনে করে।  

মহিলা পরিষদ সংসদীয় কমিটির এহেন অবাস্তব মন্তব্যের সঙ্গে একমত হতে পারছে না। সংগঠনটি বাল্যবিয়ের শিকার মেয়েদের দোষারোপ না করে প্রকৃত সমস্যা সমাধানে মনোযোগী হয়ে সরকারসহ নাগরিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে।

জেইউ/আরএইচ