চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন , ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারের প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার দুটি মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে। এগুলো মূলত সিডিএ বাস্তবায়ন করছে। বার বার এ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে, তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’

রোববার (২৯ আগস্ট) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পুরাতন নগর ভবনের কে.বি আবদুচ সাত্তার মিলনায়তনে চসিক ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৭ম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরীতে ৫৭টি খালের মধ্যে ৩৩টি সিটি করপোরেশনের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। এই খালগুলোর পুনরুদ্ধার সংস্কার ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন কতটুকু সফল হতে পারে, তা বুঝতে পারছি না। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন খালের উপর যে বাঁধ দেওয়া হয়েছিলো এবং এখনো আছে সেগুলো অপসারণের কথা দিয়েও তা করা হয়নি। এ কারণে এবার বর্ষা মৌসুমে নগরীতে জলাবদ্ধতা প্রকট হয়েছে। নালা-নর্দমা ও খালে পড়ে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক।’

মেয়র বলেন, ‘চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগে দক্ষ ও যোগ্য জনবল এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব রয়েছে। আবার সিটি করপোরেশনে অনেক বিভাগে বাড়তি ও অপ্রয়োজনীয় জনবলও রয়েছে। এছাড়া অত্যাধুনিক পরিচ্ছন্ন সরঞ্জাম এবং মশক নিধন সংক্রান্ত কার্যকরী ওষুধেরও অভাব রয়েছে। নগরীর নালা-নর্দমা-খাল সংস্কারের জন্য ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। আশা করি, তা অনুমোদিত হবে।

তিনি আরও বলেন, এবার বর্ষা মৌসুমে দীর্ঘায়িত ও অতিবর্ষণ হওয়ায় নগরীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সংস্কার কাজ করা সম্ভব হয়নি। ফলে পোর্ট কানেকটিং রোড ও মাঝির ঘাট স্ট্যান্ড রোড দীর্ঘদিন ধরে যান ও মানুষ চলাচলের উপযোগিতা হারিয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা কাজ না করে সটকে পড়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এসব কাজের জন্য নতুন ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। এই সড়ক দুটিসহ নগরীর অচল সড়কগুলোকে যানবাহন চলাচল উপযোগী করে গড়ে তুলতে প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মেয়ের বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যেসব রাস্তা ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে সেগুলো ঠিক করে দেওয়ার দায়িত্ব প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষের। কিন্তু তারা তা করেননি বলেই সংশ্লিষ্ট এলাকায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।

মেয়র বলেন, চসিক কখনও সরকারি থোক বরাদ্দের উপর নির্ভরশীল ছিল না এবং এখনো নেই। তাই রাজস্ব বিভাগকে আরও বেশি গতিশীল হতে হবে। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে কোথায় কোথায় অসামঞ্জস্য বা কর নির্ধারণগত ত্রুটি ও পরিসংখ্যানগত জরিপের অভাব রয়েছে তা চিহ্নিত করে হালনাগাদ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যৌক্তিক আয়ের পরিধি বাড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে এ ক্ষেত্রে যেন করদাতাদের প্রতি কোনো অবিচার অন্যায় চাপ প্রয়োগ না হয়।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিব খালেদ মাহমুদের সঞ্চালনায় সাধারণ সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, প্যানেল মেয়র, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর, বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

কেএম/এসকেডি