পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন- ফাইল ছবি

একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার দুই হোতাকে এখনও দেশে ফিরিয়ে না আনতে পারাকে খুবই ‘দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তবে এদের একদিন দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। 

রোববার (১৩ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক এখনও দুই ঘাতক জীবিত আছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- চৌধুরী মঈনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান খান; যাদের একজন যুক্তরাষ্ট্রে ও অপরজন ইংল্যান্ডে অবস্থান করছেন। এদের নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে, কিন্তু এখনও তারা দিব্বি লুকিয়ে আছে।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সকল খুনির বিষয়ে সরকারের অবস্থানের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের স্ট্যান্ডিং পলিসি হচ্ছে, যত ঘাতক বা অপরাধী রয়েছে আমরা তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করতে চাই। এদের ক্ষেত্রেও আমরা একই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

বুদ্ধিজীবীদের দেশে ফেরানোর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে মোমেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য সরকারের বিভিন্ন অজুহাতের কারণে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকলেও এই দুই খুনিকে দেশে ফেরাতে ঝামেলা হচ্ছে। তারা বিভিন্ন অজুহাত তুলে ওদের দেশে পাঠাচ্ছে না।’

এ সময় ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর নিয়েও কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের প্রথম দলকে স্থানান্তর নিয়ে বিদেশিরা ভুল তথ্য প্রচার করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভাসানচর নিয়ে একটা নেতিবাচক কথাবার্তা হচ্ছে, ভাসানচর নাকি ভেসে যাবে? এটা একটা ভুল কনসেপ্ট (ধারণা)। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের সময়ও ভাসানচরে পানি ঢুকেনি। কক্সবাজার ক্যাম্প থেকেও ভাসানচর নিরাপদ জায়গা। কিন্তু বহির্বিশ্বে এটা নিয়ে ভুল ধারণা রয়েছে।’

কক্সবাজারের ক্যাম্পে থাকা ১১ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নিরাপদ আশ্রয় দিতেই দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচরে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করে সরকার। পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা এই দ্বীপে অনেক আগ থেকে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের চেষ্টা করছিল সরকার।

কিন্তু বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলের চাপে সেটা সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে গত ৪ নভেম্বর স্থানান্তরের প্রথম ধাপে উখিয়ার কয়েকটি ক্যাম্প থেকে বাসে ও জাহাজে করে দুদিনের দীর্ঘ যাত্রা শেষে এক হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গার একটি দলটি সেখানে পাঠায় সরকার।

এনআই/এফআর