বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, খুব সহজে বলতে পারি নির্বাচন কমিশন একটি আইন থাকতেই হবে এবং সেই আইনের ভিত্তিতেই কেবলমাত্র নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব। 

শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ বিল-২০২১ এর ওপর জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। 

রুমিন ফারহানা বলেন, আমরা সীমানা নির্ধারণের কথা শুনি, নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা শুনি। ২০১৮ এবং ২০১৪ এর নির্বাচনের পর এই শব্দগুলোর আর প্রাসঙ্গিকতা আছে কি না?

তিনি বলেন, জনগণের ম্যান্ডেন্ট পাওয়া একটা সরকার ২০১১ সালের আদমশুমারি নিয়ে যে খেলা খেলেছে, সেটা দেখলে খুব সহজে বোঝা যাবে নির্বাচনের এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে আদমশুমারি এখন কতটা ভয়াবহ হতে পারে। এই আদমশুমারির উপর ভিত্তি করে কীভাবে সংসদ নির্বাচনে আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ হবে।

বিএনপি দলীয় এই সংসদ সদস্য বলেন, সামনে আর একটি নির্বাচন কমিশন গঠন হতে যাচ্ছে। সংবিধানের ১১৮ (১) বলছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অনধিক ৪ জন নির্বাচন কমিশনার নিয়ে বাংলাদেশে একটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। উক্ত বিষয়ে প্রণীত আইনের বিধান সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দেবে।

যতবার বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করেছি, হেনস্তার শিকার হয়েছি

একজন লাল পাসপোর্টধারী হিসাবে দেশের বাইরে যাওয়ার সময় এবং আসার সময় বারবার হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন রুমিন ফারহানা। 

তিনি বলেন, সংসদ সদস্য হওয়ার পরে একটা লাল পাসপোর্ট পেয়েছিলাম। এরপর পৃথিবীর বহুদেশের বিমানবন্দরে যথেষ্ট সম্মান পেয়েছি। শুধু বাংলাদেশ আসা-যাওয়ার সময় হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। 

এ সময় স্পিকার তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার পয়েন্টটা নোটেড। 

রুমিন ফারহানা বলেন, সংবিধান রাষ্ট্রের সঙ্গে তার নাগরিকের চুক্তি। এতে নাগরিক অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে বলা আছে। নাগরিক হিসাবে কী মৌলিক অধিকার পাব সেটা বলা আছে। 

তিনি বলেন, আমার দুর্ভাগ্য গত সাত-আট বছর ধরে যতবারই আমি দেশের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমার পাসপোর্ট, ভিসা, টিকিট থাকা সত্ত্বেও আমাকে বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি। যদিও বা দু’একবার সুযোগ পেয়েছি। আমাকে তার আগে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা বিমানবন্দরে আটকে রাখা হয়েছে। 

রুমিন বলেন, আমার পাসপোর্ট নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আড়াই-তিন ঘণ্টা পরে ফিরে আসার পরে ফ্লাইটের সময় থাকলে যেতে পেরেছি। না হলে পারিনি। বাংলাদেশে আসার সময়ও এক ধরনের হেনস্তার শিকার গত সাত আট বছর ধরে হচ্ছি। 

বিএনপির এই সংসদ সদস্য বলেন, ২০১৭ সালে আমার এক রিট দায়েরের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট পরিষ্কার নির্দেশনা দিয়ে বলেছিলেন আমাকে কোনো রকমের বাধা দেওয়া যাবে না। স্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত যখন আমি বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করি, তখন একইভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে। কার নির্দেশে, কোন অধিদফতরের কারণে.. কোন কারণ কোনদিন আমাকে দেখানো হয়নি। 

তিনি বলেন, আমাদের রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ। আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগ। আমাদের সংবিধান এমনভাবে লিখিত যেখানে আইনবিভাগের সঙ্গে নির্বাহী বিভাগের একটা ওভারল্যাপিং হবেই। ৭০ ধারা যতদিন আছে, ততদিন কোনো কার্যকর আইনবিভাগ পাব এই আশা করি না। 

রুমিন ফারহানা বলেন, সরকারে যে থাকুক না কেন? এই সংবিধান অনুযায়ী ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে ন্যস্ত। সেই অবস্থায় বিচার বিভাগ স্বচ্ছতা ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারলে রাষ্ট্রের নাগরিকদের টিকে থাকা প্রায়ই অসম্ভব। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে বিচার বিভাগের অনেক প্রশ্ন রয়েছে।

তিনি বলেন, কিছুক্ষেত্রে বিচার বিভাগ খুব স্পষ্ট রায় দেন। ন্যায়ের পক্ষে রায় দেন। সেই জায়গায় বিচার বিভাগের রায়কে প্রশাসন একেবারে অগ্রাহ্য করে রাষ্ট্র টিকে থাকবে কী করে? নাগরিকরা তাদের অধিকার কী করে ভোগ করবে? 

এইউএ/জেডএস