করোনা ও ব্রেক্সিট পরবর্তী নতুন কৌশলগত রূপরেখা প্রণয়নে বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পার্মানেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি ফিলিপ বার্টনের মধ্যে বৈঠকটি বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) লন্ডনে অনুষ্ঠিত হবে। 

সেই লক্ষ্যে একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে আজ বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, লন্ডনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, চলমান আফগান ইস্যু, জলবায়ু, রোহিঙ্গা ইস্যু ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যু স্থান পাবে।

মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, বৈঠকে ঢাকা ও লন্ডনের মধ্যে সম্ভাব্য সবগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে দুই দেশ। বিশেষ করে ব্রেক্সিট ও করোনা পরবর্তী দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ে দুই দেশ কীভাবে কাজ করবে তার নতুন কৌশল বা রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হবে। তাছাড়া করোনা ইস্যুতে বাংলাদেশি নাগরিকদের যুক্তরাজ্যের লাল তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য শক্ত যুক্তি উত্থাপন করবে ঢাকা।

তিন বছর পর বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত রাষ্ট্রের কাতার থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ২০২৪ সালের পর যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি পণ্যের সুবিধা বহাল থাকা ও ২০২৭ সালের পর ইইউর জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে বিভিন্ন ধরনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশ। বৈঠকে এসব বিষয় তুলে ধরা হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা প্রত্যেকটা ইস্যু তুলে ধরব।’

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, যুক্তরাজ্যের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে প্রতিবেদন বা মানবাধিকার ইস্যুতে ব্রিটেনের পক্ষ থেকে যেসব মন্তব্য করা হয়েছে, তা উপস্থাপন করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো মন্তব্য বা নাক না গলানোর জন্য শক্ত অবস্থানের কথা তুলে ধরবে ঢাকা।

এদিকে, সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠক করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডামিনিক রাব। বৈঠকে ড. মোমেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে করোনা ইস্যুতে বাংলাদেশি নাগরিকদের যুক্তরাজ্যের লাল তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার অনুরোধ করেন। 

জবাবে ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের হ্রাস সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত আছে যুক্তরাজ্য। তবে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত পর্যালোচনা করেন। আমি আশ্বস্ত করতে চাই যে, আমাদের দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের কারণে ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশকে লাল তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করবে।

তাছাড়া ব্রিটেনের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গারা যেন রাখাইনে ফিরতে পারে সেজন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

এনআই/ওএফ