বর্তমানে মেয়েটির বয়স ২১ বছর। ১৬ বছর বয়স থেকে তাকে ধর্ষণ ও পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে একটি অসাধু চক্র। পাঁচ বছর ধরে তার সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের কথাও বলতে দেয়নি চক্রটি।

শেষ পর্যন্ত ওই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পিবিআই।

পিবিআই জানায়, দরিদ্র হওয়ায় বাবা-মা তাদের মেয়েকে খালা বাসনা বেগমের কাছে রাখে। লতা বেগম নামে এক নারীর বাসায় তাকে গৃহকর্মী হিসেবে পাঠিয়ে দেন খালা বাসনা। লতার স্বামীই ওই মেয়েকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে।

সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইর ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ জোনের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, মেয়েটির বাড়ি গোপালগঞ্জ। ২০১৬ সালের ২২ এপ্রিল সোহাগ ব্যাপারী নামে একজন গাড়িচালক তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে মেয়েটিকে নুরের চালা এলাকার গলির সামনে নামিয়ে দেন। এরপর থেকেই মেয়েটি নিখোঁজ। পরিবার ভেবেছিল, মেয়েটি মারা গেছে।  

ধর্ষণের ঘটনার ৮ দিন পর ২৪ এপ্রিল পূর্ব ভাটারার চিতাখোলা ব্রিজের পূর্ব পাশে বালুর মাঠে অজ্ঞাত পরিচয় এক কিশোরীর বস্তাবন্দি গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে ভাটারা থানা পুলিশ।

পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, মেয়েটিকে তিন-চারজন মিলে ধর্ষণ করে গলা কেটে হত্যা করে এবং সুযোগ বুঝে বালুর মাঠে পুঁতে রাখে। ঘটনা শুনে মেয়েটির খালা বাসনা বেগম আত্মীয় স্বজনসহ থানায় গিয়ে আংশিক বিকৃত কিশোরীর গলাকাটা মরদেহ দেখেন। পরনের জামা দেখে তিনি পুলিশকে জানান, এটি ওই মেয়েরই অর্থাৎ তার ভাগ্নির মরদেহ।

মেয়েটির খালা প্রথমে থানায় একটি জিডি করেন এবং পরবর্তী সময়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ১৯(২)/৩০ -এ মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

এ মামলায় ভাটারা থানা পুলিশ ২০১৯ সালে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। তবে প্রতিবেদনে ‘তথ্যগত ভুল’ আছে উল্লেখ করে এর তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পিবিআইকে। পাঁচ বছর পর মেয়েটিকে উদ্ধার করে পিবিআই।

এসপি মিজানুর রহমান জানান, পিবিআইর একটি বিশেষ টিম আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বিশেষ অভিযানে ফরিদপুর জেলা পুলিশের সহায়তায় ফরিদপুর থেকে মেয়েটিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে।

এআর/আরএইচ