কোভিড-১৯ মহামারি সময়কালীন দেশের বিভিন্ন স্থানে নারীকে ধর্ষণ, ধর্ষণের পর ভিডিও ধারণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, স্কুলছাত্রী ও শিশুকে ধর্ষণের মতো বর্বর ও নৃশংস সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

পাশাপাশি এসব ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি। বুধবার মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এবং সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানুর সই করা বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৮ আগস্ট সিলেট জেলার কানাইঘাট উপজেলার ৮নং ঝিংগাবাড়ী ইউনিয়নের আগতালুক গ্রামে এক নারীকে ধর্ষণ করে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে পরে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাটি ধামাচাপার চেষ্টা করেন গ্রাম্য মাতব্বররা এবং দুর্বৃত্তের ভয়ে নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগী বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন।

গত ৮ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জে ঘোষপুরে কলেজছাত্রীকে তুলে নিয়ে শমসেরনগর চা বাগানে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। 

পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠিতে সোহাগদল গ্রামে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নেছারাবাদ থানায় মামলা হয়েছে।

গত ১২ সেপ্টেম্বর নোয়াখালী জেলার সদর উপজেলায় ধর্মপুর ইউনিয়নের ইব্রাহিম মেম্বারের মৎস্য খামারে এক গৃহবধূ দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। ওই ঘটনায় সুধারাম থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দি ইউনিয়নের চতুর্থ শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে সবজি কেটে দেওয়ার জন্য নিজের ঘরে ডেকে প্রতিবেশী যুবক ধর্ষণ করে। শিশুটিকে উদ্ধার করে গুরুতর অবস্থায় বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে পরে তাকে হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়।

মহিলা পরিষদ মনে করে, কোভিড মহামারির সময় এ ধরনের সহিংসতার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে যৌন সহিংসতা ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি গ্রহণ সাপেক্ষে দ্রুত বিচার নিশ্চিতকরণে আশু কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে মহিলা পরিষদ। সেই সঙ্গে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে সারাদেশে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছে।

জেইউ/আরএইচ