বাংলাদেশের ভেতরে ভারতের কোস্টাল বেসলাইন, জাতিসংঘ মহাসচিবকে চিঠি
সমুদ্রসীমা নির্ধারণের জন্য যে উপকূলীয় ভিত্তিরেখা বা বেসলাইন ব্যবহার করেছে ভারত তার একটি অংশ বাংলাদেশের সীমানায় পড়েছে। ৭ বছর ধরে বিষয়টি দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করে বাংলাদেশ ব্যর্থ হয়েছে।
দীর্ঘদিন দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দেয় বাংলাদেশ।
বিজ্ঞাপন
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে মহাসচিবের কাছে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে। জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে এরই মধ্যে ওই চিঠিটি প্রকাশ করা হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ সালের মে মাসে ভারত তার সমুদ্রসীমা নির্ধারণের যে বেসলাইন ব্যবহার করেছে সেটার প্রতিবাদ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিল্লিকে ওই বছরের অক্টোবরে চিঠি দেয়। উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতকে বিষয়টি ঠিক করার অনুরোধও করা হয়। কিন্তু তা এখনও করেনি দিল্লি।
বিজ্ঞাপন
দিল্লিকে ঢাকার পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হলেও চলতি বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশের নির্ধারিত বেসলাইনের বিরোধিতা করে জাতিসংঘকে চিঠি দেয় ভারত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জাতিসংঘ মহাসচিবকে লেখা চিঠিতে বাংলাদেশ জানায়, দীর্ঘদিন বাংলাদেশ বিষয়টি জাতিসংঘ ও এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে অবহিত করেনি। কিন্তু এখন বাংলাদেশ এর বিরোধিতা করছে এবং ততদিন পর্যন্ত করতে থাকবে যতদিন না ভারত বিষয়টি ঠিক করছে এবং জাতিসংঘকে জানাচ্ছে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের বরাবর পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশ উল্লেখ করেছে, ১৯৭৬ সালে ভারত সরকার সমুদ্র বিষয়ক টেরিটোরিয়াল ওয়াটার ও মেরিটাইম জোন আইন প্রণয়ন করে। এই আইন প্রণয়নের ৩৩ বছর পর ২০০৯ সালে ভারত ভিত্তিরেখা নির্ধারণের জন্য সেই আইনে সংশোধনী আনে। ২০০৯ সালের সংশোধনীতে ভারত ‘স্ট্রেট লাইন বেসলাইন’ পদ্ধতি ব্যবহার করছে, যেটা জাতিসংঘের সমুদ্র আইনবিষয়ক কনভেনশনের ৭ নম্বর ধারার পরিপন্থী। ২০১৪ সালের সালিশি আদালতের রায় অনুযায়ী বাংলাদেশ সমুদ্রে মহীসোপান নির্ধারণ করেছে। সেই রায়ের পর দুই দেশের সমুদ্রসীমায় আর কোনো বিরোধ থাকতে পারে না বলে মনে করে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম বলেন, ‘ভারত যেভাবে তাদের বেসলাইন নির্ধারণ করেছে, সেটি আনক্লজের ৭ নম্বর ধারার পরিপন্থী। দুই পক্ষের মধ্যে সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত বিরোধ জাতিসংঘের আদালতে মীমাংসা হয়েছে। এরপর অন্য কোনও দাবি জাতিসংঘের কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার যৌক্তিকতা নেই।’
এনআই/এসকেডি