রাজধানীর ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন বাধা দূর করা, বিজয় সরণির কলমিলতা বাজারটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন দখল করে রেখেছে হয়েছে অভিযোগ তুলে এ জন্য মেয়রের কাছে ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানিয়েছে নুরতাজ আরা ঐশী নামে এক নারী। ঐশী বলছেন, তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদেরের নাতনী। 

আজ (সোমবার) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ঐশী বলেন, ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্পটি ২০০৩ সাল থেকে বাস্তবায়ন শুরু করেন আমার বাবা। অন্যান্য যেকোনো প্রকল্প থেকে এই প্রকল্পটি এক্সেপশনাল, কেননা এখানে সরকারের একটা টাকা ইনভেস্ট করার প্রয়োজন নেই। প্রকল্পটির ভূমি সরকারি হলেও তার দখলদার ছিল সব বস্তিবাসী। বস্তিবাসীদের নিয়ে সরকার নানাভাবে হিমশিম খাচ্ছিল। তখন আমার বাবা সকলকে কনভেন্স করলেন প্রজেক্টের ব্যাপারে। এরপর ২০১০ সাল পর্যন্ত হাজার হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ ও অন্যান্য কাজ সম্পাদন করেছেন। আমার দাদার রেখে যাওয়া পারিবারিক সম্পত্তি বিক্রি করে ও সাধারণ মানুষের দেওয়া কিছু অর্থ সহযোগিতায় কাজ করা হয়। কিন্তু ভূমি মন্ত্রণালয়ের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও প্রকল্পবিরোধী চক্র আমাদের পরিবার ও আমাদের প্রতিষ্ঠান এনএসপিডিএলকে অবৈধভাবে প্রজেক্ট ছাড়া ও দেশ ছাড়া করে ২০১০ সালে।

তিনি বলেন, এ প্রকল্পের ভেতরে আজ ভূমি মন্ত্রণালয়ের কিছু দখলদার আমাদের নগদ টাকা, মালামাল, প্রায় ৩০ কোটি টাকার নির্মাণসামগ্রী ও কোটি কোটি টাকা লুটপাট করে চলছে এখন পর্যন্ত। তারা গত ১১ বছর যাবত আমাদের সম্পদ লুটেপুটে খাচ্ছে এবং এখন সকল প্রকল্পবাসীকে নানাভাবে কষ্ট দিচ্ছে গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে। 

কলমিলতা বাজার প্রসঙ্গে তিনি বলেন,বিজয় সরণির কলমিলতা বাজারটি আমাদের পারিবারিক সম্পত্তি। কিন্তু এটা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) অবৈধভাবে জবর দখল করে আছে। বিষয়টি সাবেক মেয়র আনিসুল হক সমাধানের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তার মৃত্যুর কারণে সেটা থেমে যায়। সেসময় এই পদক্ষেপ থেকে সুপ্রিম কোর্ট ডিএনসিসির পক্ষ থেকে আমাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আদেশ দেন। কিন্তু বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলাম সেটা করছেন না। তিনি সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক আমাদেরকে আইন অনুসারে ক্ষতিপূরণ প্রদান করছেন না। তিনি দীর্ঘ একটা সময় পার করছেন। মেয়র আতিকুল ইসলাম আদালতের রায় অমান্য করে চলেছেন। এই অবস্থায় আমরা নিজেরাও আর্থিকভাবে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। তাই ক্ষতিপূরণটি দ্রুত প্রদানের দাবি আমাদের।

এছাড়াও ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রের দায়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের শাস্তি প্রদানে হাইকোর্টের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা, ভূমি মন্ত্রণালয় ও এনএসডিএলের যাবতীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন, চুক্তি অনুসারে সালিশি বোর্ডের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা, শহীদ পরিবার হিসেবে জানমাল ও সম্পদের সুরক্ষা প্রদানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারি অন্যান্য সুবিধা প্রদান করা এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের এনএসপিডিপির চুক্তি বাতিলের আদেশ অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঐশীর বাবা ও ভাষানটেক-এনএসপিডিএল প্রকল্পের এনএসপিডিএলের প্রধান আব্দুর রহিম এবং ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্পের বিভিন্ন ভুক্তভোগীরা।

এমএইচএন/এনএফ