চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় অবিলম্বে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটি। রোববার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানান বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান মনির।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে পাথর নিক্ষেপে সহকারী ট্রেনচালক কাওছার আহম্মেদ চোখে মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন। ১৫ আগস্ট খুলনাগামী আন্তঃনগর ট্রেন সীমান্ত এক্সপ্রেসে পাথর নিক্ষেপে আজমীর নামে একটি শিশুর চোখ নষ্ট হয়ে যায়। 

চলন্ত ট্রেনে পাথরের আঘাতে রেলকর্মীদের মৃত্যু ঘটনাও ঘটেছে। ২০১৩ সালে চট্টগ্রামে প্রীতি দাস নামে এক প্রকৌশলী পাথরের আঘাতে নিহত হন। গত ৭ জানুয়ারি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর ট্রেন সুবর্ণা এক্সপ্রেসে কুমিল্লায় পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় চারজন যাত্রী আহত হন। ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর চট্টগ্রাম থেকে থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া সুবর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

১৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাতটার দিকে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ঢাকা গামী আন্তঃনগর তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনে পাথর নিক্ষেপে দুইজন আহত হন। ২৪ ডিসেম্বর জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুরে ঢাকাগামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেসে পাথর নিক্ষেপে জহুরুল ইসলাম নামে এক যাত্রী আহত হন। ২০১৭ সালে সারা দেশে প্রায় দেড় শতাধিক পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় দুই শতাধিক যাত্রীসহ ১৪ জন রেলওয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারী আহত হয়েছে। গত বছর ১৯ নভেম্বর মালবাহী ট্রেনে পাথর নিক্ষেপে গার্ডসহ ৬ জন নিহত হয়। গত ৫ বছরে প্রায় ২ হজার ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় ট্রেনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটির সভাপতি বলেন, দুষ্কৃতিকারীরা চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করে নিরাপদ যাত্রাকে অনিরাপদ করে তুলছে, করছে রেলের ব্যাপক ক্ষতি, মানুষের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। এসব ঘটনা কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র কি না রেল কর্তৃপক্ষ তা চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হচ্ছে। শনাক্ত করতে পারছে না কারা পাথর ছুড়ছে।

তিনি আরও বলেন, রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারা অনুযায়ী ট্রেনে পাথর ছোড়া হলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। তবে পাথর নিক্ষেপে কারো মৃত্যু হলে ৩০২ ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। যদিও এসব আইনে কারো শাস্তির কোনো নজির নেই।

ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের এ ঘটনাগুলো রেলওয়ের বিরুদ্ধে পরিবহন মালিকদের ষড়যন্ত্র কি না তা খতিয়ে দেখে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান মনিরুজ্জামান মনির।

এএসএস/আরএইচ