জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ূন কবীর

জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম হুমায়ূন কবীরের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সহজেই ‘মৃত তালিকা’ থেকে ‘জীবিত’ হচ্ছেন ভোটাররা। এর আগে যেসব ভোটারের জীবিত থেকেও মৃতদের তালিকায় নাম ওঠে, পুনরায় তাদের জীবিতের তালিকায় নাম ওঠাতে উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের ক্ষমতা দিয়ে দ্রুত এসব আবেদনের সমাধান করতে নির্দেশ দেন তিনি।

এনআইডি কর্মকর্তারা জানান, অনেক ভোটার জীবিত থাকার পরও মৃত ভোটার তালিকায় নাম ওঠে। রোল-ব্যাক করে পুনরায় মৃতদের জীবিত ভোটারের তালিকায় আনতে উপজেলা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের ক্ষমতা দেয় এনআইডি। মাঠ কর্মকর্তাদের ক্ষমতা দেওয়ার পর থেকে কয়েক ধাপে অনেক মৃত ভোটার জীবিত হয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এক হাজারের বেশি নাগরিক পুনরায় জীবিত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।

এর আগে ইসি এক নির্দেশনায় জানায়, যেসব জীবিত ভোটারের স্ট্যাটাস ভুলক্রমে মৃতদের তালিকায় চলে যায় সেগুলোর রোল-ব্যাক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন অফিসারকে (উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসার) ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, রেজিস্ট্রেশন অফিসাররা কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিএমএস) ব্যবহার করে রোল-ব্যাক করতে পারবেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে অনুমোদন দিতে হবে। রোল-ব্যাক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এছাড়া কোনো ভোটার যাতে হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়েও সজাগ দৃষ্টি রাখতে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়।

এনআইডির কর্মকর্তারা জানান, এত দিন ডাটাবেজে মৃত স্ট্যাটাস রয়েছে এমন জীবিত ভোটারদের তথ্য উপজেলা অফিস চিঠি দিয়ে জেলা নির্বাচন অফিস, জেলা নির্বাচন অফিস আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস এবং আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস তথ্যগুলো সমন্বয় করে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে পাঠাত। পরে কমিশনের অনুমোদন নিয়ে আইসিটি বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিত, যা ছিল সময়সাপেক্ষ। সম্প্রতি মাঠপর্যায়ে এ সমস্যা সমাধানের সুযোগ দেওয়ায় নাগরিকদের ভোগান্তি কমেছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন কমিশন কার্যালয়

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনআইডির এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ডিজি স্যার দায়িত্ব নেওয়ার পর কয়েকটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জীবিত হয়েও মৃতদের তালিকায় থাকা ভোটারদের ভোগান্তি কমানো। তিনি নিজ উদ্যোগে প্রত্যেক উপজেলা ও থানা নির্বাচন অফিসারকে মৃতদের জীবিত স্ট্যাটাসে আনতে কমিটি করে দিয়েছেন। ফলে বিশাল সময়সাপেক্ষ কাজটি এখন নিজ থানা বা উপজেলাতেই করতে পারছেন ভোটাররা।

এ প্রসঙ্গে এনআইডি মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম হুমায়ূন কবীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, এনআইডি সেবাগ্রহীতাদের জন্য কিছু বিষয় সহজ করে দিয়েছি। আগে ভোটার তালিকায় মৃত ক্যাটাগরির নাগরিক জীবিত ক্যাটাগরিতে আনতে অনেক সময় লাগত। বর্তমানে উপজেলা ও থানা নির্বাচন অফিসে আবেদন করেই এ সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে।

‘আমরা উপজেলা ও থানা নির্বাচন অফিসারদের এ সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা দিয়েছি। যেকোনো ভোটারের এ ধরনের সমস্যা থাকলে তাদের সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে তথ্য-প্রমাণাদি দিয়ে সহজেই মৃত তালিকা থেকে জীবিত হতে পারবেন। মূলত, সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমাতে যা যা করা দরকার আমরা সে চেষ্টাই করে যাচ্ছি।’

সূত্রে জানা যায়, গত এক বছরে প্রায় ১০ হাজার ভোটারকে মৃত তালিকা থেকে পুনরায় ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইসির দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১১ কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার ৬৬৯ ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার পাঁচ কোটি ৬৫ লাখ ৯৮ হাজার পাঁচজন, নারী ভোটার পাঁচ কোটি ৫১ লাখ ২২ হাজার ২২৩ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ৪৪১ জন।

এসআর/এমএআর/