পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তি কার্যকর চায় বাংলাদেশ
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা
পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তি কার্যকরের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। চুক্তি কার্যকরের আহ্বান জানিয়ে এখনও যেসব দেশ চুক্তি স্বাক্ষর করেনি তাদের স্বাক্ষর করার আহ্বান জানান জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) জাতিসংঘে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এই আহ্বান জানান।
বিজ্ঞাপন
জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জানায়, পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তি (টিপিএনডব্লিউ) কার্যকর হওয়ার ঐতিহাসিক মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে নিউইয়র্ক, জেনেভা এবং ভিয়েনায় একযোগে আয়োজিত ভার্চুয়াল ইভেন্টে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগ দেয় বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের প্রতি অবিচল থাকা বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতির ফলে এ চুক্তি স্বাক্ষরকারী প্রথম ৫০টি দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ের অন্যতম একজন প্রবক্তা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অব্যাহত আহ্বানকে ধারণ করে বাংলাদেশ ২০১৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।
বিজ্ঞাপন
পরবর্তীতে জাতিসংঘের ৭৪তম অধিবেশন চলাকালীন ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর চুক্তিটি অনুসমর্থন করে বাংলাদেশ।
১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে আহ্বান জানিয়েছিলেন তা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন বাংলাদেশি দূত।
পারমাণবিক প্রযুক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের বিষয়ে বাংলাদেশ সবসময়ই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা পারমাণবিক প্রযুক্তির গবেষণায় আরও বেশি বিনিয়োগ করার জন্য বিশ্বকে আহ্বান জানান। তিনি শান্তিপূর্ণ ও পারমাণবিক অস্ত্র মুক্ত বিশ্বের জন্য পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে অব্যাহতভাবে বৈশ্বিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ারও আহ্বান জানান।
জাতিসংঘের স্থায়ী মিশন জানায়, পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সম্পর্কিত চুক্তি (টিপিএনডব্লিউ) স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর জন্য পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার, বিকাশ, পরীক্ষা, উৎপাদন, মজুদকরণ, কেন্দ্র স্থাপন, স্থানান্তর এবং হুমকি দেওয়া নিষিদ্ধ করতে এটিই হচ্ছে প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তি। এ চুক্তিতে এখন পর্যন্ত ৮৬টি দেশ স্বাক্ষর করেছে এবং ৫১টি দেশ অনুসমর্থন করেছে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে ২০২০ সালের ২৪ অক্টোবর ৫০তম অনুসমর্থনকারী দেশ হিসেবে হন্ডুরাসের দলিলাদি জমা দেওয়ার ৯০ দিন পর ২২ জানুয়ারি ২০২১ থেকে চুক্তিটি কার্যকর হলো।
জাপানের হিরোসিমা ও নাগাসিকায় পারমাণবিক বোমার আঘাত পাওয়া মানুষসহ যেসব কর্মী সুদীর্ঘ সময় ধরে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
অস্ট্রিয়া, ব্রাজিল, কোস্টারিকা, ইন্দোনেশিয়া, আয়ারল্যান্ড, মেক্সিকো, নাইজেরিয়া, নিউজিল্যান্ড, সাউথ আফ্রিকা ও থাইল্যান্ডের উদ্যোগে এ ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেডক্রস এবং ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন টু অ্যাবলিস নিউক্লিয়াস উইপনের প্রধানরা।
এনআই/এইচকে