রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন: সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ ভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। শুক্রবার (২৩ জানুয়ারি) গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (জিএফএমডি) এর ১৩তম সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি এ আবেদন করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে আমাদের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা দরকার। বাংলাদেশ ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় দিয়েছে। আবার জলবায়ু ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। সে কারণে বাংলাদেশ এসব সমস্যা এককভাবে সমাধান করতে পারবে না। সমস্যা সমাধানে জিএফএমডির সঙ্গে সম্পৃক্ত সব রাষ্ট্র আমাদের বিভিন্ন উপায়ে সহযোগিতা করতে পারে।’
বিজ্ঞাপন
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মাঝে একটি চুক্তি হয়েছিল। ওই চুক্তি অনুযায়ী ২০১৮ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে প্রত্যাবাসন শুরুর কথা ছিল। তবে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি। ২০১৯ সালে দুই দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের নিরাপত্তা পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ফিরতে রাজি হননি রোহিঙ্গারা।
বিজ্ঞাপন
তবে সম্প্রতি চীনের মধ্যস্থতায় হওয়া ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পর ইতিবাচক সাড়া আসছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা নতুন বছরের শুভেচ্ছা বার্তার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী কাইয়া টিন জানান, আগের চুক্তি অর্থাৎ ২০১৭ সালে হওয়া চুক্তির ভিত্তিতেই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার ফেরাতে চায়।
বাংলাদেশও আশা প্রকাশ করছে, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করতে পারবে।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিভিন্ন সমস্যা ও জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন।
অভিবাসন সংশ্লিষ্ট জিএফএমডির ১৩তম সম্মেলনটি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়। সংস্থাটির চেয়ারের দায়িত্বে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাত এবারের সম্মেলনের আয়োজন করে। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে সম্মেলনের আয়োজন করায় আমিরাতকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
অনুষ্ঠানে মহামারির কারণে অভিবাসন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে মোমেন জিএফএমডিকে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সম্প্রদায়, আঞ্চলিক ও বিশ্ব অংশীদারদের এ নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারিতে অভিবাসন খাতে একটা ভঙ্গুর অবস্থা তৈরি হয়েছে। অভিবাসীরা এখন খারাপ সময় অতিক্রম করছে। এ সময়ে অভিবাসী কর্মীদের বেতন, স্বাস্থ্য , চাকরি এবং দেশে ফেরার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। জিএফএমডির উচিত বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে সবার কাছে তুলে ধরা।’
এনআই/এমএইচএস