নিখোঁজ শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব রাফি

১১ দিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। তবুও সন্ধান মেলেনি মালয়েশিয়ার এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির নিখোঁজ শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব রাফির। গত ১৩ জানুয়ারি রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি রাফি।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, গত ১৩ জানুয়ারি সকাল ৯টা ২২ মিনিটে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সি ব্লকের ৫/এ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান সাদমান সাকিব রাফি। কাঁধে ছিল ব্যাগ। নিখোঁজের আগে ব্যবহৃত সাদমানের মোবাইল ফোন ও সিম কোনোটিই এখন ব্যবহৃত হচ্ছে না। নিখোঁজের আগের রাত থেকেই বন্ধ ও ফোন থেকে বিচ্ছিন্ন তার ব্যবহৃত সিম।

সাদমান নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ডিএমপির ভাটারা থানায় নথিভুক্ত সাধারণ ডায়েরির তদন্ত কাজের সমন্বয় করছেন ভাটারা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রফিকুল হক।

তিনি রোববার ঢাকা পোস্টকে বলেন, থানা-পুলিশের পাশাপাশি একাধিক সংস্থা সাদমান নিখোঁজের ঘটনার তদন্ত ও উদ্ধারে কাজ করছে। তবে আমরা এখন পর্যন্ত তার সন্ধান পাইনি। তার অবস্থানও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও সিম বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে বিচ্ছিন্ন থাকায় তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়েও ট্রেস করা সম্ভব হয়নি।

ভাটারা থানা পুলিশ জানায়, বসুন্ধরায় সাদমানের বাসার আশপাশে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, সকাল ৯টা ২২ মিনিটে সাদমান ল্যাপটপের ব্যাগ পিঠে নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন।

ছেলের সন্ধান না মেলায় উদ্বিগ্ন মা মনোয়ারা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘দেশে সাদমানের ঘনিষ্ট বন্ধুবান্ধব নেই। পরিচিত, আত্মীয়-স্বজন, সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেছি, কিন্তু সাদমানের খোঁজ কেউ দিতে পারেননি। আমার ছেলে অপহৃত হলে এতো দিতে ফোন আসতো। হয়তো মুক্তিপণও চাইতো। সেরকম কিছু ঘটেছে কি-না সেটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলতে পারবে।’

তিনি আরও বলেন, কোথাও গিয়ে নিজে থেকে আত্মগোপন করবে সেরকম ছেলে সাদমান না। আজকে ১২টা দিন, প্রশাসন চেষ্টা করছে সব রকম। কিন্তু বুঝতে পারছি না, আমার এ রকম সহজ সরল, সৎ ও মেধাবি ছেলে আত্মগোপন করে থাকবে তা বিশ্বাস করি না।

এরআগে সাদমানের নিখোঁজের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ার পর এক প্রতারক সাদমানকে ফেনীতে পাওয়া গেছে ও উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে তার মা আনোয়ারাকে জানান। ওই প্রতারক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আট হাজার টাকাও নেন।

ওই প্রতারণার ঘটনায় করা জিডির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হাফিজুর রহমান বলেন, প্রতারকের অবস্থান জামালপুরে। তাকে ধরতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কাজ করছে।

পরিবারের ভাষ্যমতে, নিখোঁজ সাদমান মালয়েশিয়ার এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির (এপিইউ) ট্রিপল ‘ই’ বিভাগের ছাত্র। গত ১৯ সেপ্টেম্বর লকডাউনের মধ্যে তিনি মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরেন। সেখান থেকে দ্বিতীয় সেমিস্টার শেষ করার পর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। সাদমানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা সৌদি আরবে। মাঝেমধ্যে সাদমান বিষণ্ন থাকতেন। এ কারণে গত বছরের নভেম্বরে তার চিকিৎসা করানো হয়েছে।

জেইউ/এনএফ