নতুন অর্থবছরে আরও সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা চায় সওজ
চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) তুলনায় আরও ১১ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা বেশি আবদার করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রত্যাশিত না থাকলেও আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের এডিপি ২৮ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে সওজ।
এ বিষয়ে সওজের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আসমা আক্তার জাহান বলেন, নতুন অনুমোদিত প্রকল্প ও আসন্ন নতুন মেগা প্রকল্পগুলো সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য এ অর্থের প্রয়োজন হবে।
বিজ্ঞাপন
সওজের পর্যালোচনা সভার তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের এডিপিতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জন্যই বরাদ্দ ২৪ হাজার ৫৬৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১৭ হাজার ২১৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) বরাদ্দ। ডিটিসিএর জন্য ১০ কোটি ৫১ লাখ টাকা, ডিএমটিসিএলের জন্য ৭২ কোটি ৪৫ লাখ ১৫ হাজার টাকা, এমআরটি লাইন-৫ (নর্দান) এর জন্য ৮০০ কোটি টাকা, এমআরটি লাইন-৫ (সাউদার্ন) এর জন্য ১০০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, সচিবালয় কোডে সংরক্ষিত বরাদ্দ ৩৩২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
সওজের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর (প্রোগ্রামিং) তথ্যানুযায়ী, গত ২০১৯-২০ অর্থ বছরে এডিপিতে বরাদ্দ ছিল ১৭ হাজার ছয় কোটি ৪৩ লাখ টাকা। যা আরএডিপিতে বৃদ্ধি পেয়ে হয় ১৮ হাজার ৬৮২ কোটি ৯২ লাখ টাকা। কিন্ত রিএপ্রোপ্রিয়েশন অনুযায়ী বরাদ্দ থাকায় আশানুরূপ অগ্রগতি সম্ভব হয়নি। ২০২০-২১ অর্থবছরে এডিপিতে বরাদ্দ ১৭ হাজার ২১৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এখানে সরকারি খাতে অর্থায়ন ১৪ হাজার ২০৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ও বৈদেশিক সহায়তা তিন হাজার ১১ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
বিজ্ঞাপন
এর মধ্যে ছাড়যোগ্য অর্থের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৯০৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। থোক বরাদ্দ ৪ হাজার ২৯৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। থোক বরাদ্দ জিওবির ৩০ শতাংশ। গত দুই অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা। এজন্য আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ২৮ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রয়োজন।
এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসের (জুলাই-ডিসেম্বর) এডিপির অগ্রগতির তথ্যানুযায়ী, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের চলমান প্রকল্প রয়েছে ১৯৭টি। যার মধ্যে বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট ২১টি। আর এই ছ’মাসে বাস্তবায়ন অগ্রগতি মাত্র ২৩ দশমিক ২৬ শতাংশ। যেখানে অর্থ ব্যয় হয়েছে মাত্র ৫ হাজার ৭১৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা। অর্থ ছাড় হয়েছিল ৩৯ দশমিক ১৬ শতাংশ। ১৬ দশমিক ১০ শতাংশ অর্থই খরচ করতে পারেনি এই বিভাগের অধীন বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো।
সওজ কর্মকর্তারা বলেন, তাদের অধীনের কাজগুলো হলো মূলত মাঠ পর্যায়ের। করোনার কারণে এসব নির্মাণ কাজ সবার নিরাপত্তার জন্য বন্ধ রাখতে হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই কাজের গতি কম হয়েছে। ফলে বাস্তবায়ন হার কমবে। এখন আবার সেই কাজ পুরোদমে শুরু করা হচ্ছে।
বর্তমানে এডিপিভুক্ত প্রকল্পগুলোর বিষয়ে আইএমইডি সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, চলতি অর্থবছরে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন খুব যে খারাপ অবস্থা তা নয়। বাস্তবায়ন হার দুই শতাংশের কিছু বেশি পিছিয়ে আছে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায়। মনে রাখতে হবে আমরা কোভিড-১৯ ও কোভিড-১৯ পরবর্তী সময় পার করছি।
তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ের কাজগুলো কিছুটা সময় বন্ধ থাকায় গতিটা স্লো ছিল। তবে এখন সেটা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হচ্ছে। যেটা পিছিয়ে আছি তা আমরা সহসাই কাটিয়ে উঠতে পারব আমি বিশ্বাস করি। গত অর্থবছরে যখন মহামারি খুবই ভয়াবহ অবস্থা ছিল তখনও কিন্তু ৮০ শতাংশের বেশি বাস্তবায়নের হার ছিল। তখন মিডিয়াও চিন্তা করেছে কিভাবে এতোটা হলো।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্ব ও সরকারের সদিচ্ছার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। এখানে নেতৃত্ব ভাল নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে বলে আমি মনে করি।
এসআর/ওএফ