বিভিন্ন ধর্মের অনুসারী সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় ‘সুরক্ষা আইন’ করার দাবি জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। শুক্রবার (২২ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের নেতাকর্মীরা। এতে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। পরে সন্ধ্যায় শাহবাগ থেকে মশাল মিছিল নিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে উপস্থিত হয়ে কর্মসূচি শেষ করেন তারা।

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের দাবি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় অবশ্যই সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন, শারদীয় দুর্গাপূজার সময় কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারা দেশে যে হামলা-অগ্নিসংযোগ হয়েছে এতে অনেকেই হত্যার শিকার হয়েছেন। গতকালও একজন মারা গেছেন। যারা হত্যার শিকার হয়েছেন তাদের পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পরিবারের সদস্যদের শিক্ষা ও চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে হবে।

সাজন কুমার বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের কোনো নিরাপত্তা আছে বলে মনে করি না। এ সংখ্যালঘুদের নিরপত্তায় সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে। অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

শাহবাগে বিক্ষোভে বক্তারা বলেন, সবাই জানেন দেশব্যাপী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর কী নারকীয় হামলা হয়েছে। রাষ্ট্র সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িতরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। আগেও সাম্প্রদায়িক হামলায় সংখ্যালঘুরা বিচার পায়নি। হামলার নেপথ্যে যারা আছে, তাদের মুখোশ উন্মোচন করে দেওয়া হোক। এমন শাস্তির আওতায় আনা হোক যেন তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সংগঠনের মধ্যে ছিল- আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাসংঘ, বাংলাদেশ সনাতন কল্যাণ জোট, শারদাঞ্জালি ফোরাম, বাংলাদেশ হিন্দু লয়ার্স অর্গানাইজেশন (বিএইচএলও), আর্য প্রতিনিধি সভা বাংলাদেশ, জাগো হিন্দু পরিষদ, ঢাকা ওয়ারী রবিদাস হিন্দু কল্যাণ সংঘ, ভক্ত সংঘ, হিন্দু সংরক্ষণ ও বাস্তবায়ন পরিষদ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম ও হিন্দু ছাত্র ফোরাম, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজ সংরক্ষণ সমিতি, ইন্টারন্যাশনাল শ্রী শ্রী হরি গুরুচাঁদ মতুয়া মিশন, ঢাকা বিভাগীয় কমিটি, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট।

দুর্গাপূজা চলাকালে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লা নানুয়া দীঘির পাড়ে অস্থায়ী পূজামণ্ডপে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন রাখা নিয়ে ধর্ম অবমানানার অভিযোগ তুলে হামলা চালানো হয়। পরে তা কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। এতে মন্দির ও পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের পাশাপাশি প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে।

একে/এসএসএইচ