ঢাকায় আগামী মাসে শুরু হতে যাচ্ছে প্রযুক্তি খাতের বিশ্ব সম্মেলন ‌‘ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজি’র (ডব্লিউসিআইটি) ২৫তম আসর। প্রযুক্তি খাত নিয়ে নানা আয়োজন থাকবে এ আসরে।

মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে প্যান-প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের পদ্মা হলে এসব তথ্য তুলে ধরেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

পলক বলেন, আগামী ১১ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে থেকে চার দিনব্যাপী এ আসর শুরু হবে। এতে তথ্য ও যোগাযোগ বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে অনলাইনেও যুক্ত হওয়া যাবে। সম্মেলনটির সমান্তরালে একই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চলের আন্তর্জাতিক সম্মেলন অ্যাসোসিও ‘ডিজিটাল সামিট ২০২১’। অনুষ্ঠানগুলো ভৌত ও ভার্চুয়াল পদ্ধতির সংমিশ্রণে অনুষ্ঠিত হবে।

দ্য ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্সের (উইটসা) উদ্যোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি যৌথভাবে এ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে। সহযোগী হিসেবে রয়েছে বেসিস, বাক্কো, ই-ক্যাব ও আইএসপিএবি। এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আইসিটি দ্য গ্রেট ইকুলাইজার’।

ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে পলক বলেন, চার দিনব্যাপী এ সম্মেলনে থাকছে মোট ২৩টি সেমিনার, মিনিস্টেরিয়াল কনফারেন্স, বিটুবি সেশন। অনলাইনে নিবন্ধিত হয়ে এই সেমিনারগুলোতে অংশ নেওয়া যাবে।

১১ নভেম্বর, মিনিস্টেরিয়াল কনফারেন্সে কি-নোট স্পিকার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন। 

প্রতিদিন সেমিনারের পাশাপাশি থাকছে বিশেষ আয়োজন। এ বিশেষ আয়োজনে প্রথম দিন থাকবে ‌‘ডিজিটাল বাংলাদেশ নাইট’। এ দিন বাংলাদেশের গত ১২ বছরের তথ্য-প্রযুক্তিতে অগ্রগতির সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।

১২ নভেম্বর, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে স্বাধীন রাষ্ট্র ও তথ্য প্রযুক্তিতে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর গ্রহণ করা উদ্যোগগুলো উপস্থাপন করা হবে। এ দিন ‘অ্যাসোসিও অ্যাওয়ার্ড নাইট’ অনুষ্ঠানে এশিয়া-ওশেনিয়া অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেওয়া হবে।

১৩ নভেম্বর, সন্ধ্যায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অগ্রগতি, অর্জন-গৌরবের বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে। এ দিন ‘উইটজা আইসিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড নাইট’ অনুষ্ঠানে সারা বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।

১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনে, ডব্লিউসিআইটির রজত জয়ন্তী উদযাপিত হবে। চার দিনব্যাপী এ বিশ্ব সম্মেলনের বিভিন্ন সেমিনারে অংশগ্রহণ করবেন বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।

সংবাদ সম্মেলনে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রায় ১৩ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের যে অর্জন তা এই সম্মেলনের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ হিসেবে ব্র্যান্ডিং করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

পলক বলেন, প্রযুক্তির অলিম্পিক খ্যাত ‘ডব্লিউসিআইটি ২০২১’ আমরা আয়োজন করতে যাচ্ছি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, বাণিজ্য, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং বিচারিককার্যে বৈষম্য দূর করা এবং বাংলাদেশকে শ্রমনির্ভর অর্থনীতির দেশ থেকে একটি প্রযুক্তি ও মেধা নির্ভর ডিজিটাল অর্থনীতিতে রূপান্তর করতে আইসিটিকে শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছি। 

মিট দ্যা প্রেসে জানানো হয়, সম্মেলনটির বিভিন্ন অংশ উপভোগ করার জন্য অ্যাপ উন্মুক্ত করা হয়েছে। গুগল প্লে স্টোর ও আইফোনের অ্যাপ স্টোর থেকে ‘WCIT 2021’ নামের অ্যাপটি বিনামূল্যে ডাউনলোড করা যাবে। তবে ব্যবহারের আগে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। এছাড়াও www.wcit2021.com.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করে ভার্চুয়ালি সম্মেলন ও প্রদর্শনী ঘুরে আসা যাবে। সরাসরি ও অনলাইন রেজিস্ট্রেশনসহ ডব্লিউসিআইটি সম্মেলনের যাবতীয় তথ্য www.wcit2021.org.bd ওয়েবসাইটটিতে পাওয়া যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. আব্দুল মান্নান, বিসিএসের সভাপতি মো: শাহিদ-উল-মুনীর। 

একে/ওএফ