চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, ‘পরিচ্ছন্ন বিভাগে কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে। তাদের তদারকী করছে কাউন্সিলররা। তারপরও চট্টগ্রাম পরিপূর্ণ ক্লিন সিটি হয়ে উঠতে পারেনি। 

চট্টগ্রাম নগরীকে ক্লিন সিটি হিসেবে দেখতে চাই উল্লেখ করে চসিক মেয়র বলেন, কোনো কোনো স্থানে ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা যায়। এখন থেকে এর দায় বর্তাবে কাউন্সিলরদের ওপর।

বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লায় পুরাতন নগর ভবনের কে. বি আবদুস সাত্তার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত চসিকের ৬ষ্ঠ পরিষদের ৯ম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।

মেয়র বলেন, নগরীতে সরকারের যে সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে সেগুলো যেন ঝুঁকি ও ঝামেলা মুক্ত থাকে। নাগরিক নিরাপত্তা বিঘ্ন ও জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে না দাঁড়ায়। সে জন্য দেখ-ভাল, তদারকী ও সমন্বয়ের দায়িত্ব, কর্তৃত্ব ও কর্তব্য পালনে চসিককে সম্পৃক্ত করতে হবে।

রেজাউল করিম আরও বলেন, ‘চসিকের কর্মপরিষদ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত। যে কোনো কর্মকাণ্ডে জবাবদিহিতা-দায়বদ্ধতার বিষয়টি অন্যান্য সেবা সংস্থার তুলনায় চসিকেরই সবচেয়ে বেশি। নগরীর চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে সিডিএ, ওয়াসা, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য সেবা সংস্থার বড় ধরনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। সে তুলনায় চসিকের সম্পৃক্ততা সামান্য। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক ক্ষেত্রেই নানান সমস্যা, ভোগান্তি এমনকি অনাকাঙ্ক্ষিত প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। এসবের দায় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষের হলেও সাধারণ মানুষের সমালোচনার তীর থাকে চসিকের দিকেই। কারণ চসিক কর্মপরিষদ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়েই গঠিত।’

চসিক মেয়র বলেন, ‘বহদ্দারহাট মোড় থেকে রোজ গার্ডেন পর্যন্ত ও ডিটি রোডের কিছু অংশের বেহাল অবস্থা ৪ বছরেও কাটেনি। এই অংশগুলো নগরীর একটি দুর্বিষহ চিত্র। এলিভেটেড এক্সপ্রেস প্রকল্প ও জলাবদ্ধতার মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যে মাটিগুলো তোলা হয়েছে তা রাস্তার পাশে রাখার ফলে যানজট ও জলজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে নাগরিক দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ শুষ্ক মৌসুমে প্রকল্প বাস্তবায়নকারীদের নিজ দায়িত্বে উত্তোলিত মাটি সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘নালা-নদর্মা-খালগুলোর ওপর অবৈধভাবে স্ল্যাব ও স্থাপনা তৈরির কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। অবৈধ স্ল্যাব ও স্থাপনাগুলো নিজ উদ্যোগে সরিয়ে ফেলতে হবে। অন্যাথায় কর্পোরেশন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল জরিমানাসহ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তবে নালার ওপর স্ল্যাব বসানোর দায়িত্ব চসিকের।

মেয়র আরও বলেন, ‘নগরীর আলোকায়নের বিষয়ে কোনো অজুহাত শুনতে চাই না। তার চুরি হয়েছে, বাল্ব নষ্ট হয়ে গেছে এসব ঠুনকো কারণ দাঁড় করানো যাবে না। আলোকায়নের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিকসহ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলররা।

কেএম/এসএম