চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাদী জে আকিবকে (২১) আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

চিকিৎসক বলছেন ,শক্ত কোনো কিছু দিয়ে আঘাতে তার মাথার হাড় ভেঙে গেছে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ অবস্থায় অপারেশন করে মাথার হাড়ের একটা অংশ খুলে আপাতত তার পেটের চামড়ার নিচে রাখা হয়েছে। কিছুটা উন্নতি হলে সেটি আবার আগের জায়গায় প্রতিস্থাপন করা হবে। এ কারণে মাথার ব্যান্ডেজে লিখে দেওয়া হয়েছে, ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’। সঙ্গে এঁকে দেওয়া হয়েছে বিপজ্জনক চিহ্ন।   

চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক এস এম নোমান খালেদ চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন আকিবের অবস্থা কিছুটা ভালো। আইসিইউতেই তার চিকিৎসা চলছে। মাথার ডান দিকে আঘাতে হাড় ভেঙে গেছে। দীর্ঘ সময় নিয়ে তার অপারেশন করা হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, আকিবের মাথার হাড়ের একটি অংশ বের করে নিয়ে পেটের মধ্যে রাখা হয়েছে। কিছুটা সুস্থ হলে হাড়ের অংশটি মাথায় প্রতিস্থাপন করা হবে। মাথার যে অংশে অপারেশন করা হয়েছে সেখানে এখন হাড় নেই। ওখানে যদি কেউ চাপ দেয়, তাহলে ব্রেনের ক্ষতি হবে। তাই ব্যান্ডেজে লিখে রাখা হয়েছে, ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’। সবাইকেই সতর্ক করা হয়েছে। আশা করছি, আকিব পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবে। 

শুক্রবার রাত ও শনিবার চমেক ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের জেরে চমেক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর শিক্ষার্থীদের দ্রুত হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

সংঘর্ষে আকিবের আহত হওয়ার ঘটনায় ১৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার রাতে পাঁচলাইশ থানায় মামলাটি দায়ের করেন কলেজের পঞ্চম বর্ষের ছাত্র তৌফিকুর রহমান। পাঁচলাইশ থানার ডিউটি অফিসার এসআই সোহেল রানা এ তথ্য জানান। 

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মারধরের একপর্যায়ে আকিবের মাথায় আঘাত করা হয়েছে। আকিবকে হকিস্টিক, বোতল দিয়ে আসামিরা আঘাত করেছে।  

চমেক সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষে জড়ানো একটি পক্ষ চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন ও আরেকটি পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয়। আহত আকিব মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফলের অনুসারী বলে জানা গেছে। 

কেএম/আরএইচ