জ্বালানি তেলের দাম কমানোর দাবি সিসিএসর
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে কেরোসিন ও ডিজেলের বাড়তি দাম সবার ওপর অমানবিক চাপ সৃষ্টি করবে বলে জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংস্থা কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটি (সিসিএস)। তাই সংস্থাটি জ্বালানি তেলের দাম না বাড়িয়ে, তা কমিয়ে পরিবহন ভাড়া, পণ্য ও সেবামূল্য সহনীয় পর্যায়ে আনার দাবি জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সিসিএসর নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ এ দাবি জানান।
বিজ্ঞাপন
বিবৃতিতে বলা হয়, করোনার মহামারিতে দেশে নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন ২ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ। বর্তমানে দেশে মোট দরিদ্রের সংখ্যা ৪২ শতাংশ বা প্রায় ৭ কোটি। এর মধ্যে দফায় দফায় নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি অত্যন্ত অমানবিক সিদ্ধান্ত।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সঙ্গে শুধুমাত্র এই পণ্যটির দামই ওঠা-নামা করে না। এর সঙ্গে পরিবহন ভাড়া, বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি ব্যবহার করে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য এবং সেবার মূল্যও বেড়ে যায়। ফলে সরকার একটি পণ্যের দাম বাড়ালেও ভোক্তাকে বহু পণ্যের দাম বাড়ার ভার সইতে হয়। জ্বালানির দাম বাড়ায় পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। এতে করে দেশীয় পণ্য রফতানি প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে।
বিজ্ঞাপন
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দাম বৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তিতে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধি এবং ভর্তুকি কমানোর যে কারণ দেখানো হয়েছে তা অযৌক্তিক। গত ৮ বছর আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কম ছিল। অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি মাত্র ৪০ ডলারেও নেমে এসেছিল। কিন্তু তখন দেশে তেলের দাম কমানো হয়নি। প্রতিবেশী অনেক দেশেই জ্বালানি তেলের দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমানো হয়েছিল। কিন্তু দেশের বাজারে না কমিয়ে সরকার বিপুল অর্থ লাভ করেছে। ফলে দেশীয় তেলের বাজার আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তুলনা করা অযৌক্তিক।
এছাড়া, এখন দেশে পেট্রল ও অকটেন আমদানি করার প্রয়োজন হয় না। নিজেদের বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্র থেকে পেট্রোল ও অকটেন তৈরি হচ্ছে। এগুলো বিক্রি করেও লাভ করছে সরকার। ফলে কেরোসিন ও ডিজেলের দাম না বাড়িয়ে কমানোর দাবি জানাচ্ছে সিসিএস।
অন্যদিকে, জ্বালানির দাম বাড়ার ক্ষেত্রে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের গণশুনানির যে আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে তাও অনুসরণ করা হয়নি। জনগণের কোনো মতামত না নিয়ে এভাবে এক তরফা দাম বৃদ্ধি হঠকারী সিদ্ধান্ত। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে তেলের দাম যথা সম্ভব কমানোর দাবি জানান সিসিএস নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ।
দেশের বাজারে গতকাল (বুধবার) ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা (২৩ শতাংশ) বাড়িয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। মূল্য বৃদ্ধির ফলে বুধবার রাত থেকেই ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৬৫ টাকার পরিবর্তে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এমএইচএস