জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করায় ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো গণপরিবহনের অঘোষিত ধর্মঘট চলছে। ফলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় আসা লোকজন গন্তব্যে পৌঁছাতে পার‌ছেন না।‌ শেষ ভরসা হিসেবে রেল স্টেশনের ভিড় করছেন তারা। কিন্তু এখানে এসেও ভোগা‌ন্তি‌তে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। মিলছে না ট্রে‌নের টিকিট।

রোববার (৭ নভেম্বর) সকালে কমলাপুর রেল স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সাম‌নে দীর্ঘ সারি। তবে মাইকে আজ‌কের কো‌নো টিকিট নেই ব‌লে বার বার ঘোষণা দিচ্ছেন টিকিট কাউন্টারের কর্মকর্তারা।

‌কি‌শোরগঞ্জে যাবেন সু‌ফিয়া বেগম। ঢাকায় এসেছিলেন মে‌য়ের বাড়িতে চিকিৎসার জন্য। বৃহস্পতিবার চিকিৎসা শেষে শুক্রবার গ্রামের বা‌ড়িতে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু গণপরিবহন ধর্মঘটের কার‌ণে যে‌তে পা‌রেন‌নি। স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সাম‌নে বসে আছেন বাড়ি যেতে। কিন্তু ট্রেনের টিকিট মেলেনি।

সু‌ফিয়া বেগম জানান, যাত্রাবাড়ী থেকে যানজট ঠেলে স্টেশ‌নে এসেছেন। কিন্তু বাড়ি ট্রেনের টিকিট পাচ্ছেন না তিনি বলেন, দুই ঘণ্টা ধরে বসে আছি। গতকালও এসে ঘুরে গেছি। ঢাকায় এসে কি যে ভোগা‌ন্তি‌তে পাড়লাম।

টিকিট কাউন্টারের কর্মকর্তারা জানান, অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে আজকের সব টিকিট শেষ হয়েছে গেছে। তাদের কিছু করার নেই।‌ এখন ৯ থেকে ১১ নভেম্বরের টিকিট বিক্রি করছেন তারা।

স্টেশ‌নে আসা সুমন নামের এক নির্মাণ শ্রমিক বলেন, আমরা পাঁচ জন সিলেট যাব কাজের জন্য। বাড়ির মালিক গত তিন দিন ধ‌রে যেতে বলছেন। বাস বন্ধ থাকায় যেতে পারিনি। সকালে ফোনে বললেন আজ‌কের মধ্যে যেতে না পারলে কাজ অন্য কাউকে দি‌য়ে দেবে। তাই আজ টিকিট কাটলাম, দাঁড়ি‌য়ে হলেও যে‌তে হবে।‌

স্টেশনের সার্বিক প‌রি‌স্থিত জানতে চাইলে কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার ঢাকা পোস্টকে বলেন, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সড়কের পুরো চাপ এখন ট্রেনের ওপর পড়েছে। স্বাভাবিক দিনের তুলনায় যাত্রী এখন দ্বিগুণ। যাত্রীদের সুবিধার্থে আজ ২৬টি অতিরিক্ত কোচ দেওয়া হ‌য়ে‌ছে। সকালে ও সন্ধ্যার পর ব্যাপক চাপ পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দি‌তে কষ্ট হচ্ছে।

টিকিট নেই- যাত্রী‌দের এ অভি‌যোগ স্বীকার ক‌রে স্টেশন ম্যানেজার ব‌লেন, আজ কো‌নো টিকিট নেই। অগ্রিম টিকিট দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু বাস বন্ধ, তাই অনেক যাত্রীর টিকিট না পেলেও গ্রামে যে‌তে হবে। তা‌দের জন্য ‘এক্সট্রা ফেয়ার টিকিটের’ (ইএফটি) ব্যবস্থা করা হ‌য়ে‌ছে।

এদিকে স্টেশনের প্লাটফর্মের প্রবেশ পথে দেখা যায়, সাত থেকে আট জন কর্মী ইএফটি টিকিট বিক্রি করছেন। সেখানে যাত্রীরা ভিড় করেছেন টিকিটের জন্য। কারণ যেভাবেই হেলাক নির্দিষ্ট গন্তব্যে যে‌তে হবে তাদের।

এসআই/এসএসএইচ