পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দুজন স্বৈরশাসক ও দুইজন সামরিক শাসক এবং তার সঙ্গী সাথীরা আমাদের জন্য প্রতি পদে পদে মাইন পুঁতে রেখে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলার পথে এখনো মাইন পুঁতে রাখা আছে। সেই মাইনগুলো সচেতনভাবে দেখে দেখে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনের মাধ্যমে পরিবর্তন করে বিচারের ব্যবস্থা করেছেন তিনি। এটা কিন্তু তার নির্বাহী আদেশে নয়।

শুক্রবার (১২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে প্রগতিশীল সাংবাদিক মঞ্চ আয়োজিত ‘ঘৃণ্য আইন ইনডেমনিটি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

মান্নান বলেন, দায়মুক্তি শব্দটির সঙ্গে আমার নিজের কিছু সমস্যা ছিল। দায়মুক্তি কেবল আইন ও আদালত দিতে পারে এটি আমার ধারণা। পৃথিবীর কোথাও আমি দেখিনি নির্বাহী আদেশে দায়মুক্তি দিয়ে দিয়েছে। অন্যায় করেছি, এই অন্যায়ের বিচার তোমরা কেউ করতে পারবে না। খুন করেছি, খুনের বিচার তোমরা কেউ করতে পারবে না। আমি যেটা করেছি সেটাই সত্য এবং ন্যায়ের। এই দাম্ভিক, অনৈতিক, মূর্খতায় পরিপূর্ণ জিঘাংসা, ঘৃণা এবং প্রতিহিংসাপরায়ণ রায় কোথাও কেউ দিয়েছে কি না আমার আমার জানা নেই। এটাই দুর্ভাগা বাংলাদেশকে মোকাবিলা করতে হয়েছে।

তিনি বলেন, ওরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল ব্যক্তি হিসেবে। পরবর্তীতে সামরিক শাসক ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করে আমাদের স্বাধীনতার মূলভিত্তি অসাম্প্রদায়িকতাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। যা বর্তমানে আমাদের চলার পথে বিভ্রান্ত করছে।

আলোচনায় বঙ্গবন্ধু হত্যায় খালেদা জিয়ার সম্পৃক্ততা ছিল এমন মন্তব্য করে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, খালেদা জিয়া ইচ্ছা করলে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে খুনিদের বিচার করতে পারতেন। কিন্তু করেননি। কেন করেননি? কারণ, তারা নিজেরাই তো খুনি। খালেদা জিয়ার স্বামী খুনি, খালেদা জিয়া নিশ্চয়ই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। সুতরাং খুনিরা খুনিদের বিচার করবে না। পরে ২১ বছর চলল দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি। এই সভ্য সমাজে বিচারহীনতা বলে কোনো আইন কোথাও খুঁজে পাবেন না। এটি চালিয়েছিল স্বৈরাচারী এরশাদ এবং জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। ২১ বছর পর যখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় আসল, তখন এই আইন বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার শুরু করেন শেখ হাসিনা। কিন্তু ৪ বছর পরে যখন খুনিরা আবার ক্ষমতায় আসল তখন তারা সেই বিচার বাধাগ্রস্ত করার সমস্ত চেষ্টা করল।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ।

এমএইচএন/এসকেডি/জেএস