তামাকের কর ফাঁকি রোধে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি জরুরি
সংগৃহীত ছবি
কর বৃদ্ধিই তামাক নিয়ন্ত্রণে সর্বোৎকৃষ্ট কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু দেশের ক্রটিপূর্ণ কর ব্যবস্থা তামাক কোম্পানিগুলোকে কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। তামাকের কর ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করা হলে দেশে তামাক থেকে রাজস্ব আদায় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। এক্ষেত্রে কর ফাঁকি রোধে ট্র্যাকিং, মনিটরিং পদ্ধতি ডিজিটালাইলেশন করা জরুরি।
মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশের (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট কৈবর্ত্য সভাকক্ষে আয়োজিত তামাক কোম্পানির কর ফাঁকি রোধে করণীয় বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সভাটি যৌথভাবে আয়োজন করে ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি এবং টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল।
বিজ্ঞাপন
সভায় ‘তামাক কর ফাঁকি রোধে আধুনিকায়ন’ বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের প্রকল্প অফিসার মিঠুন বৈদ্য।
প্রবন্ধে মিঠুন বৈদ্য বলেন, বর্তমানে তামাকজাত পণ্যের উপর আরোপিত শুল্ক পদ্ধতিটি হলো অ্যাড ভ্যালোরেম কর পদ্ধতি। যা ত্রুটিযুক্ত এবং তামাক কোম্পানিকে কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ দেয়। এছাড়া বর্তমানে প্রচলিত ৪টি মূল্যস্তরের কারণে কর আদায় পদ্ধতিটি আরও জটিল হয়ে যায়। তামাক কর আদায়ের অন্যতম মাধ্যম হলো ব্যান্ডরোল। অথচ এ ব্যান্ডরোল নকল করে তামাক কোম্পানিগুলো বড় অংকের কর ফাঁকি দিচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে যাচাইয়ের ব্যবস্থা করা গেলে রাজস্ব ফাঁকি রোধ করা সম্ভব। এছাড়া নির্ভরযোগ্য বারকোড, হলোগ্রাম, স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিংয়ের ব্যবহারে রাজস্ব ফাঁকি রোধ করা যাবে।
সভায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসিরুদ্দীন আহমেদ বলেন, তামাকের উপর কর আদায়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তাই কর ব্যবস্থা ডিজিটালাইজেশনের বিকল্প নেই। যা সরকারের রাজস্ব খাতকে শক্তিশালী করবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ ও করবৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোম্পানির হস্তক্ষেপ রয়েছে।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সমন্বয়ক সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, শুল্ক বৃদ্ধি না করে তামাকের মতো ক্ষতিকর পণ্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তামাকের উপর শুধু কর বৃদ্ধিই যথেষ্ট নয় বরং কর আদায়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ অধিক জরুরি। পাশাপাশি সমস্যা সমাধানে সুনির্দিষ্ট কর কাঠামো প্রণয়ন, তামাকের বাজার পর্যবেক্ষণ ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকা বাধ্যতামূলক।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক সদস্য আমিনুর রহমান, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষক সুশান্ত সিনহা। এছাড়াও বিএনটিটিপি, টিসিআরসি, বিইআর, ইনস্টিটিউট অফ ওয়েলবিইং, দিশারী মহিলা কল্যাণ সমিতি, সুজন, বাঁচতে শিখো নারী, বিআরডিএস সংগঠনের একাধিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এইচএন/এমএইচএস