গতকাল রাতে রাজধানীর রামপুরা এলাকায় গ্রিন অনাবিল পরিবহনের বাসের চাপায় মাইনুদ্দিন নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রামপুরা ব্রিজ এলাকার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন তার সহপাঠীরা। কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন আশপাশের আরও ৫-৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) সকালে এই কর্মসূচি শুরু হয়, যা এখনো (দুপুর ১টা) চলমান আছে। তবে জরুরি সেবার গাড়ি দেখলেই ছেড়ে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, রামপুরা ব্রিজ থেকে মেরুল বাড্ডা ইউলুপ পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে মালিবাগ থেকে এয়ারপোর্ট রোডে যানচলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে আছে শত শত গাড়ি।

শিক্ষার্থীরা শ্লোগান দিয়ে বলছেন, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, আর না আর না, আমার ভাই কবরে কেন, প্রশাসন জবাব চাই।’

এদিকে শিক্ষার্থীদের এই অবরোধের প্রভাব রামপুরা-এয়ারপোর্ট রোড (প্রগতি সরণি) ছাড়িয়ে হাতিরঝিল ও গুলশান এলাকায় পড়েছে। রামপুরা ব্রিজে শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে হাতিরঝিল এলাকায় যানচলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া একইভাবে ব্যাহত হচ্ছে গুলশান এলাকার যানচলাচলও।

শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। গণপরিবহন না পেয়ে হেঁটে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন তারা।

রামপুরা ব্রিজ থেকে কালাচাঁদপুরের দিকে হেঁটে রওনা দিয়েছেন আমির হোসেন নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা যৌক্তিক দাবিতে মাঠে নেমেছে। তবে যানচলাচল বন্ধ থাকায় আমাদের খুব কষ্ট করতে হচ্ছে।

এদিকে যানচলাচল বন্ধ করে রাখলেও প্রমাণ সাপেক্ষে জরুরি সেবার পরিবহন যেতে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স, ডাক্তার, সরকারি জরুরি সেবায় নিয়োজিত গাড়ি, দূরপাল্লার যাত্রীদের গাড়ি।

ইম্পিরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, ক্যামব্রিয়ান কলেজসহ আরও ৩-৪টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। আমরা এর আগেও নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে মাঠে নেমেছিলাম। আবারও নামতে বাধ্য হলাম। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা সড়ক ছেড়ে যাব না। আমরা যানবাহন চলাচল বন্ধ করে রাখলেও জরুরি সেবার কাজে নিয়োজিত সবাইকে প্রমাণ সাপেক্ষে ছেড়ে দিচ্ছি।

এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশের একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা যেন শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে পারে, সে বিষয়ে তারা খেয়াল রাখছেন। তবে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এমএসি/এমএইচএস/জেএস