‘উন্নয়ন অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন

কক্সবাজা‌রে আশ্রিত রো‌হিঙ্গা‌দের মঙ্গ‌লের জন‌্য ভাসানচ‌রে স্থানান্তর করা হ‌চ্ছে ব‌লে জা‌নি‌য়ে‌ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মো‌মেন।

শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) সিলেটের দরগা গেট এলাকায় হোটেল স্টার প্যাসিফিকে ‘উন্নয়ন অগ্রযাত্রা’ শিরোনামে সিলেটের উন্নয়নবিষয়ক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান মন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব‌লেন, ‘আজ ভাসানচরে আরও তিন হাজার রোহিঙ্গা যাওয়ার কথা। রোহিঙ্গাদের মঙ্গলের জন্য তাদের ভাসানচরে নেওয়া হবে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ভাসানচ‌রে স্থানান্ত‌রিত রো‌হিঙ্গা‌দের জন‌্য সিঙ্গাপুরের ফাস্ট জে‌ন্টেলম‌্যান মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আল হাবশি উপহার সামগ্রী পাঠিয়েছেন।

এর আগে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী যৌথভাবে সিলেট জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট উদ্বোধন করেন। এ সময় সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া উভয় মন্ত্রী সিলেটের কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালসহ স্থানীয় সরকারের কয়েকটি উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেন।

এদিকে, কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে তৃতীয় ধাপে আজ এক হাজার ৭৭৮ জন রোহিঙ্গার একটি দল নোয়াখালীর ভাসানচরে পৌঁছেছে। কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে এক লাখকে নিরাপদ আশ্রয় দিতে দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচরে আবাসন নির্মাণ করে সরকার। দ্বীপটিতে অনেক আগ থেকে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের চিন্তা-ভাবনা করছিল সরকার। কিন্তু বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলের চাপে সেটা সম্ভব হচ্ছিল না।

অব‌শে‌ষে টেকনাফ ও উখিয়ায় থাকা রোহিঙ্গার মধ্যে গত ৪ ডিসেম্বর এক হাজার ৬৪২ জনকে প্রথম দফায় ভাসানচরে নেওয়া হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় গত ২৮ ডিসেম্বর এক হাজার ৮০৫ জন রোহিঙ্গা নোয়াখালীর ওই দ্বীপে গড়ে তোলা আশ্রয়ণ প্রকল্পে পৌঁছায়।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরু হওয়ার পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। দেশে আরও চার লাখ রোহিঙ্গা আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন।

আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি। গত বছর দুই দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাখাইনের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কায় ফিরতে রাজি হয়নি রোহিঙ্গারা।

এদিকে, রোহিঙ্গাদের ফেরানর বিষয়ে গত ১৯ জানুয়ারি চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বসে। সেখানে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের অঞ্চলভিত্তিক প্রত্যাবাসন চাইলেও মিয়ানমার ২০১৭ সালের করা চুক্তির পক্ষেই থাকে।

এনআই/এফআর