রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে বাংলাদেশ ও ভারতীয় দূতাবাস যৌথভাবে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০ বছর পূর্তিতে ‘মৈত্রী দিবস’ উদযাপন করেছে।

শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) মস্কোর বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, ভারতীয় দূতাবাসের দুর্গা প্রসাদ ধর মিলনায়তনে মৈত্রী দিবস উপলক্ষে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় রাশিয়ার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাসহ দুই দেশের দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রাশিয়া, বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী দুই দেশের নাগরিকদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

আলোচনা পর্বে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান নয় মাসের দীর্ঘ মুক্তিযুদ্ধে ভারত যেভাবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল তা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর সরাসরি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করলেও তার অনেক আগেই মুক্তিযোদ্ধারা ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর কাছ থেকে প্রশিক্ষণ ও সর্বাত্মক সহযোগীতা পেয়েছিল। যা তাদের মনোবল বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে প্রায় এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে ভারত মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।

স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীতে এই মৈত্রী দিবসের উদযাপন দিনটিকে আরও অর্থবহ ও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের ঐতিহাসিক এই সম্পর্ককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অনন্য এক মাত্রায় নিয়ে গেছেন। দুই দেশের মধ্যেকার এমন সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক অদূর ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

ভারতের রাষ্ট্রদূত পবন কাপুর বাংলাদেশ ও ভারতের ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা স্মরণ করে বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময়ে দুই দেশের মধ্যকার সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের যে ভিত্তি রচিত হয়েছিল, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে তা আরও সুদৃঢ় হয়েছে।

ভারতীয় দূত বলেন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অভিন্ন লক্ষ্যকে সামনে রেখে দুই দেশই একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে ভারতের রাষ্ট্রপতির সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সবসময় ভারতের কাছে বিশেষ স্থান দখল করে আছে।

মৈত্রী দিবস উপলক্ষে দুই দেশের নির্মিত দুটি ভিডিও প্রদর্শিত হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠান হলে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ঘটনাবলীর ওপরে একটি বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান ও কবিতা নিয়ে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এনআই/এমএইচএস