শুক্র-শনি, দুই দিনের ছুটি। শহরের জঞ্জাল ছেড়ে বাড়ি ফেরার পালা। পরিবারের সঙ্গে সপ্তাহের ছুটি কাটাতে বৃহস্পতিবার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে এমভি অভিযান-১০-এ রওয়ানা হয়েছিলেন অনেকেই। তবে আর বাড়ি ফেরা হলো না। রাত ৩টার আগুনে পানির ওপর ভেসেই পুড়তে হলো এই ঘর ফেরা মানুষগুলোকে।

লঞ্চের এমন কোনো অংশ নেই যেখানে আগুন তার তাণ্ডব দেখায়নি। পুরো লঞ্চই পুড়ে ছাই। দেখা গেছে, ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা শুধু মরদেহ স্তূপ করায় ব্যস্ত। স্বজনের জীবিত বা মরদেহের অপেক্ষায় নদীর পাড়ে এখন মানুষের ভিড়।

বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে লঞ্চের ভেতরের দৃশ্য পাওয়া যায়। একটি কেবিনে দেখা গেছে, ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে অঙ্গার হয়ে মাটিতে পড়ে আছে দুটি মরদেহ (সংযত কারণে ছবি দেখানো সম্ভব হচ্ছে না)। লঞ্চের ডেকে পরে আছে ছোট্ট শিশুটির পায়ের জুতা। আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর চেনা যাচ্ছে না মোটরসাইকেলের অস্তিত্ব।

শুক্রবার ভোর ৩টার দিকে ঝালকাঠি সদর উপজেলার সুগন্ধা নদীর গাবখান চ্যানেলে এই আগুনের ঘটনা ঘটে। আগুন লাগার পর যাত্রীদের অনেকেই নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হন। তবে লঞ্চে শিশু, বয়স্ক ও নারীসহ কমপক্ষে ৫০০ যাত্রী ছিল জানা গেছে।

লঞ্চের ভেতরের চিত্র বর্তমানে বেশ ভয়াবহ। দেখলে মনে হচ্ছে অনেক বছর আগের পরিত্যক্ত একটি লঞ্চ।

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামের লঞ্চটির ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে।

ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার শহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে মৃতদের নামপরিচয় জানা যায়নি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন।

এমএইচএস